রাজ্যে রাম-বাম এক হয়ে গেছে, এই অভিযোগ আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দেখা গেল প্রকাশ্যেই চলে এল বিজেপির বাম-প্রীতি। বিজেপির সমর্থনে পোস্টার, ব্যানার। তাতে লেখা বিজেপি প্রার্থীরই নাম। তবে গোটা ব্যাপারটাতেই রয়েছে ‘কমরেড’দের টাচ! বামেদের মতোই বিজেপির ব্যানারে ব্যবহার হয়েছে টকটকে লাল রঙ! প্রসঙ্গত, এবার লোকসভা ভোটে দমদমের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণা হতেই শুরু হয়েছে প্রচারপর্ব। সেই মতো দিন কয়েক ধরেই দমদম গোরাবাজার থেকে বিমানবন্দর একনম্বর গেট মোড় পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীর নামের পোস্টার, ছোট ব্যানার দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মজার বিষয় হল, গেরুয়া শিবিরের পোস্টার ছাপা হয়েছে লাল রঙে। হঠাৎ দেখলে যে কোনও মানুষেরই মনে হবে সেটা সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্যের পোস্টার।
বেশিরভাগ পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং-ই ঝুলছে টেলিফোনের মিটারবক্স এবং লাইটপোস্টে। বেশ খানিকক্ষণ খুঁটিয়ে দেখলে তবেই চোখে পড়ছে পোস্টারের নিচে শমীক ভট্টাচার্যের ছবি আর উপরের এককোণে সাদা রঙে আঁকা পদ্মফুল। ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে বিজেপি প্রার্থীর পোস্টার কেন বামেদের প্রতীকী রং লালের ওপর করা হল? তবে ড্যামেজ কন্ট্রোলে বিজেপির সাফাই, পোস্টারের রং ঠিক হয়ে এসেছে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে। তাদের অভিযোগ, দেওয়াল লিখনের জন্য এলাকার কোনও দেওয়ালই তারা ফাঁকা পায়নি। তাই বাধ্য হয়েই ওইভাবে মিটারবক্স বা লাইটপোস্টে পোস্টার দিতে হয়েছিল। কিন্তু এ তো গেল ব্যানার, পোস্টার লাগানোর কারণ। তবে সেই ব্যানার-পোস্টারের রঙ লাল কেন, তার উত্তর কিন্তু মিলছে না।
প্রসঙ্গত, বাংলায় বামেদের অবস্থা শোচনীয় হওয়ার পর থেকেই সিপিএম ছেড়ে বামকর্মীরা একে একে যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। আর কথায় বলে, ‘স্বভাব যায় না মলে’। তাই সিপিএমের হয়ে পোস্টার-ব্যানার তৈরিতে অভ্যস্ত কর্মীরাই এখন বিজেপির হয়ে কাজ করতে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটিয়ে ফেলেছেন। আর এর ফলে মুখ পুড়ল সিপিএম-বিজেপি উভয়েরই। প্রকাশ্যে চলে এল রামের বাম-প্রীতি। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়। ক’দিন আগেই ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের প্রচারে গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ের মাঝেই শুনেছিলেন ‘লাল সেলাম’ স্লোগান। এমনকি, দেওয়াল লিখনে ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থীর কুনার হেমব্রমের নামের আগেও লেখা হয়েছিল ‘কমরেড’। বারবার ধরে ঘটে চলা এই ঘটনাগুলির থেকেই রাজ্যে রাম-বাম আঁতাতের কথা প্রমাণ হয়ে যায়।