বছরের অন্যান্য সময়ে দেখাও মেলে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু বাংলার ভোট ব্যাঙ্ক দখল করার উদ্দেশ্যে ঠিক ভোটের আগেই ব্রিগেডে সভা করলেন মোদী। আর তার সভা উপলক্ষ্যে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড এবং সেই সংলগ্ন ময়দান এলাকায় দেখা গেল নিয়ম ভাঙার ছবি। নানারকম অনিয়মের ছবি।
মোদী যেমন সবসময়েই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ঠিক তেমনই তাঁর ভক্তরাও। ময়দানে দাঁড় করানো বাসের নীচে ছায়ায় শুয়ে ছিলেন এক ব্যক্তি। বিরক্ত মুখে ঠা ঠা রোদে বেরিয়ে এসে এক মাঝবয়সীকে বললেন, ‘‘একটু ঘুমোতে দেবে? কাল রাতে বাসে তুলেছ। সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে দাওনি। এখন এ সব গান বাজানোর কী দরকার! একটু ঘুমোতে দাও ভাই।’’ এ সব কথায় অবশ্য ভ্রূক্ষেপ নেই মাঝবয়সীর। মাথায় ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ লেখা টুপি পরে গানের তালে নাচতেই ব্যস্ত তিনি। আপত্তি শুনে থামার বদলে বাসে লাগানো বক্সের আওয়াজ আর একটু বাড়িয়ে দিয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে নাচতে শুরু করলেন।
কোথাও আবার দেখা গেল, দলীয় পতাকা লাগানো বাস-লরির ছায়ায় বসে আড্ডায় মেতেছেন একদল যুবক। নির্দ্বিধায় খুলে বসেছেন নেশার সামগ্রী! এগুলো কী? প্রশ্ন করায় হাসি হাসি মুখ করে তাঁদের এক জন বললেন, ‘‘কিন্তু কলকাতায় এসেছি, একটু উৎসব করব না? আমাদের কে কি বলবে?”
অনিয়মের দৃশ্য দেখা গেল রেড রোড ও সংলগ্ন রাস্তাগুলিতেও। হেলমেটহীন বেপরোয়া মোটরবাইক আরোহীরা দাপিয়ে বেড়ালেন দলীয় পতাকা বাইকে লাগিয়ে। যা ইচ্ছে করার নমুনা দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী পৌঁছনোর ঘণ্টাখানেক আগে। রেড রোডে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য দাঁড় করানো অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের দরজা খুলে উঠে দাঁড়িয়ে এক জন স্লোগান তুললেন, ‘‘মোদীর জয়।’’ তাঁকে টেনে নামিয়ে তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করল পুলিশ। এই হেলমেটবিহীন বাহিনীর অনেক কাউকেই ধরা পরতে হল পুলিশের হাতে।
মোদীর জন্য থাকা ‘স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি)-এর পাশাপাশি সাধারণের জন্য এ বারই প্রথম মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ব্রিগেডে। সভায় ঢোকার মোট ছ’টি গেটে এমন ডিটেক্টর বসানো হয়েছিল। তবে বেলা বাড়তে সেই মেটাল ডিটেক্টর এড়াতে সভাস্থল ঘিরতে ব্যবহৃত গেরুয়া কাপড় ছিঁড়ে ঢুকতে শুরু করলেন অনেকে। এই দৃশ্য দেখে কার্যত ছি ছি রব ওঠে। আর এখানেই আবার মোদী হারলেন দিদির কাছে। মমতার সভায় দলীয় কর্মী সমর্থকেরা নিয়মবদ্ধ ভাবেই ঢোকেন।