নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রচারে ঝড় তুলছেন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। সদ্য রাজনীতির আঙিনায় পা রাখলেও দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন সব কিছু। যেখানেই সভা করতে যাচ্ছেন প্রিয় অভিনেত্রীকে দেখতে ভিড় উপচে পড়ছে।গতকাল সোনারপুর উত্তরের কামালগাজির কর্মীসভার মঞ্চ থেকে মিমি জানালেন, নেত্রী নয় কর্মী হয়ে থাকতে চান তিনি।
মিমির এই একটা কথাতেই হাততালির শব্দে ভরে উঠল চারপাশ। মঞ্চে উঠে মাইক হাতে নিয়েই প্রথমেই সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন তাঁর পাশে থাকার জন্যে। তারপরেই তিনি বললেন, “নেত্রী হতে আসিনি। আপনাদের পাশে থেকে কর্মী হয়েই কাজ করতে চাই।’ এর পরেই অভিজ্ঞ রাজনীতিকের মতো মিমি জানালেন, ‘নেত্রী হওয়ার ইচ্ছে নেই। শুধু আপনাদের সঙ্গে কর্মী হিসেবে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। এই চাওয়া কি কোনও অন্যায়? আপনারাই বলুন, সেই সুযোগ আমাকে দেবেন তো?আমি মনে করি আমাদের নেত্রী একজনই। তিনি হলেন উন্নয়নের কান্ডারি ও মা–মাটি–মানুষের নেত্রী। নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
মঞ্চ থেকে সাবলীল মিমি আরও জানালেন, “কেউ জন্ম থেকে সব কিছু শিখে আসেন না। অভিনেত্রী হয়েছি জন্মেই অভিনয় শিখে নয়। অনেক পরিশ্রম, লড়াই করে তবেই এই জায়গায় পৌঁছেছি। আপনাদের ভালবাসা ও আশীর্বাদে। যেদিন কোচবিহারের গ্রামের বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম, সেদিন মাকে বলেছিলাম বিশ্বাস রেখো। আজ সেই কথাটাই আপনাদেরও বলতে চাই। বিশ্বাস রাখুন। কথা দিচ্ছি আপনাদের পাশে থেকে কর্মী হয়ে মানুষের জন্য কাজ করব। বারে বারে আপনাদের কাছে আসব। কোনও অসুবিধা হলে চলে যাবেন। এখান থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১৫ মিনিট। বাড়ি নিয়ে তো আর কোথাও চলে যেতে পারব না। তাই আপনাদের সঙ্গে বারে বারে দেখা হবে।”
তাঁর সভাকে ঘিরে কামালগাজিতে দলীয় কর্মী ও এলাকার মানুষের ভিড়ে জনজোয়ার বয়ে যায়। কচিকাঁচা থেকে প্রবীণ— সবাই তাঁর সভায় যোগ দেন। স্কুলের পোশাক পরা ছাত্রছাত্রীরাও সভায় এসে ভিড় করে। প্রার্থীর সই সংগ্রহ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। সভা শেষে মঞ্চের মেঝেতে বাবু হয়ে বসে খুদে থেকে বড়, সবাইকেই সই দিতে থাকেন প্রার্থী। পাশে ছিলেন সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। এর পর তিনি একটি সুসজ্জিত হুড খোলা গাড়িতে কামালগাজি থেকে গড়িয়া রোড–শো করেন। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, পুরসভার কাউন্সিলর নজরুল আলি মণ্ডল, জেলা পরিষদের সদস্য রঞ্জন বৈদ্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর সরকার, কর্মাধ্যক্ষ শশধর হালদার–সহ দলের অন্য নেতারা। এদিনও জড়তা কাটিয়ে আচমকাই মঞ্চ থেকে নিচে নেমে পড়েন মিমি। দর্শকদের সঙ্গে হাত মেলাতে থাকেন।