ভোটের মুখে আবার অস্বস্তিতে বিজেপি। মঙ্গলবার সন্ধেয় বহরমপুরের প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ জোয়ারদার আর্যের নাম ঘোষণা করেছিল বিজেপি। সেদিনই বহিরাগত, অচেনা প্রার্থী নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন নেতারা। আচমকাই কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরির প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত কৃষ্ণ জোয়ারদার। আর এই প্রশংসাই এখন গলার কাঁটা হয়ে বিঁধছে বিজেপির।
বুধবার, বৃহস্পতিবার দু–দিনই রেজিনগর, নওদায় প্রচারের ফাঁকে কৃষ্ণ জোয়ারদার বললেন, “অধীরদাকে দাদা বলে মনে করি। সম্মান, শ্রদ্ধা করি। উনি কাজের মানুষ। ওঁর দেশাত্মবোধ মনে রাখার মতো। দেখা হলে অবশ্যই কথা বলব। উনি বহরমপুর এলাকার জন্য অনেক কাজ করেছেন”। এই মন্তব্যের পরেই ওঠে সমালোচনার ঝড়।
বিজেপি এবং কংগ্রেসের আঁতাত নিয়ে রাজনৈতিক মহল সবসময়েই সরব। এই কথা যে সম্পূর্ণ ভাবে সত্যি তা স্বয়ং কৃষ্ণই প্রমাণ করে দিলেন তাঁর বক্তব্যে। তিনি জানালেন, “ অধীরদা একটা ভুল করেছেন, দল নির্বাচনে ভুল করেছেন। একটা ফুটো নৌকায় (কংগ্রেস) চেপে আছেন। বিজেপি ছিল ওঁর পক্ষে উপযুক্ত দল। আজ যদি বিজেপি–তে থাকতেন, বহরমপুরকে ‘ওয়াশিংটন’ করতে পারতেন।’
কৃষ্ণের এই মন্তব্যে অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্বও। জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস মুখে বলেন, ‘অস্বস্তির কী আছে। ঠিক কথাই বলেছেন বিজেপি প্রার্থী। অধীরদা যে বহরমপুরে উন্নয়নের কান্ডারি সেকথাই বলেছেন’। তবে অন্দরমহলের খবর যে অন্য তা স্বয়ং দলীয় কর্মীরাই জানাচ্ছেন।
জেলা তৃণমূলের সহ–সভাপতি অশোক দাস বলেছেন, ‘আমরা বারবার বলছি, বিজেপি–র সঙ্গে অধীর চৌধুরির গোপন আঁতাত আছে। বিজেপি প্রার্থীর কথায় প্রমাণ হল। মানুষ সব বুঝতে পারছেন। ভোটে অধীর তার জবাব পাবেন।’ কিন্তু কে এই কৃষ্ণ জোয়ারদার? বিজেপি সূত্রের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের মহীপালদিঘির বাসিন্দা। ১৩ বছর ধরে সন্ন্যাসী। এখন থাকেন কলকাতার শ্যামবাজার মঠে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়িতে বৈদিক যজ্ঞ করার সূত্রে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। নিজেকে বহিরাগত বলতে রাজি নন মহারাজ কৃষ্ণ জোয়ারদার। তাঁর দাবি, ‘সারা দেশ আমার ঘর। বহরমপুরেও করব আশ্রম। মন্ত্র জপ করা হবে। তারপর অনাথ আশ্রম, বৃদ্ধাশ্রমও করব।’