হাতে বাকি আর মাত্র দু’সপ্তাহ। কিন্তু এখনও প্রার্থী বাছাই ও গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে গোটা দেশজুড়েই বিপাকে গেরুয়া শিবির। পরিস্থিতি এমনই যে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাট নিয়েও সন্দিহান দলের অন্দরের নেতারাই। গত বার ছিল ২৬-এ ২৬। কিন্তু এই প্রবল বিজেপি বিরোধী হাওয়ায় মোদীর রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কি গত বারের জেতা আসন ধরে রাখতে পারবে? গতবার গুজরাটের সব ক’টি আসন জিতলেও, বিজেপির অতি বড় সমর্থকও এবার তার পুনরাবৃত্তি আশা করছেন না।
শোনা যাচ্ছে, এবার গুজরাটে বিজেপির জেতা আসনে থাবা বসাতে পারে বিরোধীরা। উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটের ফলাফলে গুজরাটের ২৬ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৮টিতে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যের সৌরাষ্ট্র এবং উত্তর গুজরাটে কংগ্রেস ভাল ফল করেছিল। ওই এলাকার সব ক’টি আসন পেতে মরিয়া কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, গত তিন দশকের মধ্যে কংগ্রেস গুজরাটে সেরা ফল করেছে ২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে। ১৮২ আসনের বিধানসভায় ৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। সেখানে ৯৯টি আসন পায় বিজেপি। টানটান লড়াইয়ে শেষ হাসি বিজেপি হাসলেও, কংগ্রেসের উত্থানে চাপ বেড়ে যায় গেরুয়া শিবিরের। বিশেষ করে সৌরাষ্ট্র এবং উত্তর গুজরাটে প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার কারণে। এবার কংগ্রেসের লক্ষ্য, আট থেকে আসন সংখ্যা আরও বাড়ানো।
বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে রাজ্যের বনসকান্ঠা, পাটন, মেহসানা, সবরকান্ঠা, সুরেন্দ্রনগর, জুনাগড়, আমরেলি ও আনন্দ লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে বিজেপির চেয়ে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। তার মধ্যে ৪ আসনে ব্যবধান ৫০ হাজার বা তার চেয়েও বেশি। এই ৮ আসনের কয়েকটিতে এবার নতুন মুখ এনেছে বিজেপি। যেমন, বনসকান্ঠায় প্রভাতভাই প্যাটেল, পোরবন্দরে রমেশ ধাডুক ও সুরেন্দ্রনগরে মহেন্দ্র মুজপড়াকে প্রার্থী করেছে দল।
অন্যদিকে, পোরবন্দর লোকসভা আসনটিও বিজেপির কাছে নিরাপদ নয়। কেননা বিধানসভা ভোটে আলাদা লড়ে এনসিপি ও কংগ্রেস বিজেপির থেকে বেশি ভোট পেয়েছিল। গুজরাট কংগ্রেস বিধানসভায় এগিয়ে থাকা আসনগুলিতেই বেশি জোর দিচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ২৪ হাজার ৪২৭ ভোট। ৪৯.১ শতাংশ। কংগ্রেস পেয়েছিল ১ কোটি ২৪ লক্ষ ৯৩৭ ভোট (৪১.৪ শতাংশ)।
সম্প্রতি, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক গুজরাটের মাটিতে হয়েছে। কর্মীদের চাঙ্গা করতে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা জনসভাও করেছেন। হার্দিক প্যাটেলকে ভোটে নামিয়েছে কংগ্রেস। পাতিদার অনামত আন্দোলনের নেতা দলে যোগ দেওয়ায় ওই সমাজের বড় অংশের ভোট পেতে আশাবাদী কংগ্রেস। সবমিলিয়ে এবার যে তাঁর নিজের গড়েই বিপাকে পড়তে চলেছেন মোদী, তা বলাই বাহুল্য।