ভোট এগিয়ে আসতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আমলা এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে সমানে কলকাঠি নেড়ে চলেছেন। অবশেষে রবিবার সেই আমলা আর কে মিত্রর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। দলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সির লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা আর কে মিত্রর স্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্মসচিব হিসেবে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্মের দায়িত্বে ছিলেন আর কে মিত্র। ওই পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর চুক্তিভিত্তিক উপদেষ্টা হিসেবে এখনও তিনি সিএপিএফের গতিবিধির নিয়ন্ত্রক হয়ে রয়েছেন। তিনি ওই পদে থাকায় যাবতীয় আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। তাঁকে রেখে দেওয়ায় যুগ্ম সচিবের ওই পদে অন্য কাউকে বসানোও হয়নি।
তৃণমূলের আরও অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে আর কে মিত্রর সম্পর্ক শুধু মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে নয়, গোটা রাজ্যেই স্বচ্ছ এবং অবাধ নির্বাচনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি দেখভাল করছেন। ব্যক্তিগতভাবেও বাহিনীর চলাফেরায় নজর রাখছেন। রাজ্যে মোতায়েনের আগে তিনি বাহিনীর সমস্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের শিখিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে হবে। সুব্রত বক্সির দাবি, রুট মার্চ করার সময় ভোটারদের বিজেপিকে জেতানোর অনুরোধ করার জন্যও বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আর কে মিত্র।
তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক চিঠিতে মন্তব্য করেছেন, এরকম ঘটনা নির্বাচনের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। এতে আদর্শ আচরণবিধির সব নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক হিসেবে তিনি নিরপেক্ষতার ধার ধারছেন না। যা থেকে আমাদের আশঙ্কা, তাঁর এহেন অযাচিত প্রভাবে বিজেপি প্রার্থীরা অন্যায্য সুবিধা পেয়ে যাবেন। এটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। সম্ভবত এই গুরুতর বিষয়টি হয়তো নির্বাচন কমিশনের জানা নেই। কারণ কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ, তিন বছরের আগে অবসর নেওয়া কোনও আধিকারিক নির্বাচনে বাহিনী মোতায়েনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারেন না।
তবে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্রর কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। কেউ অভিযোগ করে থাকলেও আমার কিছু বলার নেই।