গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামাতে জইশ জঙ্গীর আত্মঘাতী বিস্ফোরণে এক লহমায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৪ জন জওয়ান। এক নিমেষে অথৈ জলে পড়ে গেছিল এতগুলি পরিবার। ইতিমধ্যেই বাংলার দুই শহীদ জওয়ানের পরিবারের কাছে পৌঁছে গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাবতীয় সাহায্য। কিন্তু ঘটনার প্রায় দেড় মাস কেটে গেলেও মোদীর উদাসীনতায় এখনও কোনরকম কেন্দ্রীয় সাহায্য এসে পৌছয়নি শহীদ বাবলু সাঁতরা বা সুদীপ বিশ্বাসের পরিবারের কাছে। এই ঘটনায় আবারও সামনে এল কেন্দ্রের ব্যর্থতার চিত্র।
কিন্তু কেন এখনও মেলেনি কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষতিপূরণ? কল্যাণ সাঁতরা ও সুলেখা বিশ্বাস দু’জনই বলছিলেন, “যেহেতু লোকসভা ভোট। তাই হয়তো কেন্দ্রের তরফে সব ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে।” যে ভোটের জন্য ‘ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে’ সব, সেই ভোটে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে অবশ্য পিছিয়ে থাকছে না শহিদ পরিবার। নিয়ম মেনে তাঁরা যাবেন সাংবিধানিক কর্তব্য পালন করতে। সরকার গঠনে মত দেবেন নিজেদের। এই প্রসঙ্গেই বারবার তাঁরা জানালেন, মমতার সহায়তার কথা।
পুলওয়ামা কাণ্ড সম্পর্কে প্রায়ই শোনা যায়, এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তও থাকতে পারে। সেখানে সুলেখার বক্তব্য, “বাড়ির কেউ সঙ্গে না থাকলে বাইরের কেউ জানতে পারে না আমার ঘর কখন ফাঁকা থাকবে। কোথায় কী আছে? যেভাবে সব হয়েছে, তাতে এই প্রশ্নগুলো মনে তো আসেই।
বাবার মৃতদেহে ভাবলেশহীনভাবে মালা দিচ্ছে সাত বছরের মেয়ে পিয়াল। আসলে সে বুঝতেই পারেনি কত বড় একটা জিনিস হারিয়ে ফেলল সে। এখনও তার দিন কাটে সেভাবেই। মাঝেমধ্যেই মা মিতার কাছে জানতে চায়, “বাবা কোথায়?” আড়ালে গিয়ে চোখ মোছা ছাড়া কোনও উত্তর দিতে পারেন না মিতা। বাবলুর ভাই কল্যাণ সাঁতরা বললেন, “কোনও কিছুতেই যে আমাদের পরিবারের অভাবপূরণ করা সম্ভব নয়। তবু বউদি আর বাচ্চাটার ভবিষ্যতের জন্য চেষ্টা করছি সরকারি ক্ষতিপূরণগুলো পাওয়ার। রাজ্য সরকারের টাকা পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের কোনও খবর নেই।”কবে সে খবর আসবে তাও জানেন না কেউই।