‘নির্বাচনের উত্তাপ বুঝতে পারছি না। আসলে চারিদিকে বিরোধী দল বলে কিছু নেই।’ ঠিক এই ভাষাতেই সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি-সহ রাজ্যের সমস্ত বিরোধীদের কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের উত্তর কলকাতার প্রার্থী তথা লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে লোকসভা ভোট। তাই ইতিমধ্যেই প্রচারের ঢাকে কাঠি দিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা।
তিনি নিজে নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিলেও তৃণমূলের এই হেভিওয়েট প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচনের উত্তাপ বুঝতে পারছি না। আসলে চারিদিকে বিরোধী দল বলে কিছু নেই। মনে রাখবেন, উত্তর কলকাতা থেকে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়কে আমি হারিয়েছিলাম।’ আর বিজেপিকে সুদীপের কটাক্ষ, ‘সংগঠন বলে কিছুই নেই। চোরা ভোটে লোকসভায় জেতা যায় না।’
তাঁর স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুদীপ বলেন, ‘এলাকায় আমার থেকে নয়না অনেক বেশি পরিচিত। গত বিধানসভা নির্বাচনে চৌরঙ্গি থেকে দাঁড়িয়েছিলেন হেভিওয়েট নেতা সোমেন মিত্র। নয়না সোমেনকে হারিয়ে দেয়। আমি যখন দিল্লীতে থাকি, তখন নয়নাই তো এলাকা সামলায়!’
অতীতের কথা আর মনে রাখতে চান না সংসদে তৃণমূলের দলনেতা। তবে তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘সামান্য কারণে প্রায় দু’বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছিল। কাজের ক্ষতি হয়েছে ঠিকই। পরে মানুষ বুঝতে পেরেছেন, আমি অন্যায় করিনি।’ তাঁর কথায়, ‘এমন মানুষও আছেন, যাঁরা বলেন, সুদীপবাবুর আলাদা করে ভোটে কাজ করার দরকার নেই। উনি এমনিতেই জিতবেন। আসলে এলাকার মানুষ ভালবাসেন বলেই এসব কথা আমাকে বলেন।’
সুদীপের বিরুদ্ধে উত্তর কলকাতায় এবারও দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রাহুল সিনহা। ২০১৪ নির্বাচনে রাহুল সিনহা এই কেন্দ্র থেকে সুদীপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে হেরে যান। সুদীপ বলেন, ‘যে-ই দাঁড়াক, আমার কিছু এসে যায় না। রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে প্রচারে যখন নামব, তখন সব ঝড়ে উড়ে যাবে। মমতার উন্নয়নের ঝড়ের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। বিজেপির নেতারা শুধু বড় বড় কথা বলেন। শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছেন। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভাগাভাগি করছেন।’
উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে ৭টি বিধানসভায় সাতজনই তৃণমূল বিধায়ক। আর ৬০টি ওয়ার্ডের মধ্যেও অধিকাংশই তৃণমূলের দখলে। সুদীপ বলেন, ‘কাশীপুর থেকে শুরু করে ধাপার মাঠ পর্যন্ত, এই বিস্তীর্ণ এলাকায় গত ৫ বছরে বহু কাজ হয়েছে। এমন কোনও রাস্তা নেই, যেখানে আলো লাগানো হয়নি। কমিউনিটি হল, রাস্তা সৌন্দর্যায়ন, স্কুলের উন্নয়ন, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য প্রচুর টাকা দেওয়া হয়েছে। ৫ বছরে সাংসদ তহবিলের সব টাকাই আমি খরচ করে ফেলেছি। উত্তর কলকাতাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।’