বিগত ৫ বছর ধরে মোদীর শাসনকালে নোটবন্দী, জিএসটির মতো জনবিরোধী সিদ্ধান্তগুলির কারণে একাধিক বার ধাক্কা খেয়েছে দেশের অর্থনীতি। একদিকে যেমন বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম, তেমনি বেড়েছে বেকারত্বের হারও। এ হেন ‘আচ্ছে দিন’-এর ঠেলায় একেই অতিষ্ঠ দেশবাসী। তার ওপর জানা গেলে, চলতি বছরের চেয়ে আগামী অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের হাল খারাপ হবে। এই অর্থবর্ষেও দেশের অর্থনীতির শরীর-স্বাস্থ্য যতটা ভাল যাবে বলে আশা করা হয়েছিল, ততটা হবে না। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমীক্ষক সংস্থা ‘ফিচ রেটিংস’ এ কথা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তারা আগে যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, সেটাও শুধরে নিয়েছে।
সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট ‘গ্লোবাল ইকনমিক আউটলুক’-এ ফিচ রেটিংস জানিয়েছে, আর ১০ দিন পর, ৩১ মার্চ যে অর্থবর্ষটা (২০১৮-’১৯) শেষ হচ্ছে, তাতে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার বড়জোর হবে ৬.৯ শতাংশ। ফিচের আগের পূর্বাভাস ছিল ওই হার হবে ৭.২ শতাংশ। এ বারের পূর্বাভাসে সেই হার কমল ০.৩ শতাংশ। ফিচের আরও পূর্বাভাস, আগামী অর্থবর্ষেও (২০১৯-’২০) ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার যতটা ভাবা হয়েছিল ততটা হবে না। সেই হার খুব বেশি হলে হবে ৬.৮ শতাংশ। যদিও গত ডিসেম্বরে ফিচের পূর্বাভাস ছিল, ওই হার হবে ৭ শতাংশ। এ বারের পূর্বাভাসে সেই হার কমল ০.২ শতাংশ। যার অর্থ, চলতি অর্থবর্ষের (৬.৯ শতাংশ) চেয়েও আগামী অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার (৬.৮ শতাংশ) কমবে।
তবে এখানেই শেষ নয়। উদ্বেগের আরও কিছু বাকি রয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষের শেষে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশ। ফিচের পূর্বাভাসে তা ০.১ শতাংশ কমে দাঁড়াল ৬.৯ শতাংশে। বাড়তি উদ্বেগের আরও কারণ, আগের অথবর্ষে (২০১৭-’১৮) দেশের অর্থনেতিক শরীর-স্বাস্থ্যের লেখচিত্র। সেই গ্রাফ জানাচ্ছে, আগের অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হারটা ছিল ৭.২ শতাংশ। তার মানে, চলতি ও আগামী, পর পর দু’টি অর্থবর্ষেই দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী হয়েছে ও হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একদিকে দেশের নির্মাণ শিল্পের এগিয়ে যাওয়ার রথের রশি ক্রমশ আলগা হয়ে পড়েছে। আবার কৃষিতে উন্নয়নের ছবিটাও আশাপ্রদ নয়। সবমিলিয়ে এই পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতির কাছে ‘আচ্ছে দিন’ তো নয়ই, বরং যথেষ্টই উদ্বেগজনক।