প্রতিবারের মতো এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাজপথে নামলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে দলীয় কর্মী–সমর্থক এবং মহিলা সদস্যদের নিয়ে এই পদযাত্রার নেতৃত্ব দেন তিনি। শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে শুরু করে পদযাত্রা পৌঁছয় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। সেখানে মিনিট দশেক বক্তৃতাও দেন। ভোটের দিনক্ষণ বা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিন থেকেই পুরোপুরি ভোটের প্রচার শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মোদী-শাহ জুটি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান মমতা। পাশাপাশি নারীদের অগ্রগতি থেকে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন – সবেতেই সারা দেশের মধ্যে বাংলা কয়েক কদম এগিয়ে, সেকথাও বলেন তিনি। কী ভাবে নারীর অধিকার রক্ষা এবং তাঁদের হাত শক্তিশালী করতে বহুমুখী কাজ করছে রাজ্য সরকার, তাও তুলে ধরেন। মমতা বলেন, ‘ভোট এলেই বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, মহিলাদের জন্য লোকসভায় ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হোক। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের এমনিতেই লোকসভায় ৩৫ শতাংশ মহিলা সাংসদ রয়েছে। আগামী নির্বাচনেও সেই ধারা বজায় রেখে ৩৩ শতাংশেরও বেশি প্রার্থী দেওয়া হবে’। সরকারের পক্ষ থেকে সব ছাত্রীকেই কন্যাশ্রীর আওতায় আনা, স্বাস্থ্যসাথীতে পরিবার প্রধান হিসেবে মহিলাদের কার্ড দেওয়া, ১০০ দিনের কাজে মহিলাদের ৪৮ শতাংশ উপস্থিতির মতো বিষয়ও উল্লেখ করেন মমতা।
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে খুব শীঘ্রই। তার আগে পদযাত্রায় মমতা এবং যাত্রা শেষে পথসভা। এমন সময়ে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এল নির্বাচনের প্রসঙ্গ। মোদী তথা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে মমতা ছুঁয়ে গেলেন সবকটা ইস্যুই। দু’দিন আগেই কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকেই রাফালের বহু নথি চুরি গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতার আক্রমণ, ‘উনি তো দেশটাকেই চুরি করে নিয়েছেন। আপনি চলে গেলে দেশের মানুষ বুঝবেন, সব চুরি করে নিয়ে গিয়েছেন আপনি’।
পুলওয়ামা হামলা নিয়ে মমতা বলেন, ‘পাঁচ বছরে মনে ছিল না? কী ভাবে উরি হামলা হল, কী ভাবে পুলওয়ামা হল? আর এখন ভোটের সময় মিসাইল দেখাচ্ছেন। আপনার তো এক্সপায়ারি ডেট হয়ে গিয়েছে। এর পর জনগণের সরকার এসে কাশ্মীরে শান্তি ফেরাবে’।
বিজেপি লোকসভা ভোটে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা কববে – এমন অভিযোগ বহুবার করেছে বিরোধীরা। এ দিন ফের সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা দিয়ে বাইক কিনছে বিজেপি। এক সময় যাঁরা খেতে পেতেন না, এখন কোটি টাকার মালিক। এত টাকা কোথা থেকে আসছে? এগুলো আসলে নোটবন্দি-রাফালের টাকা।’ মোদী-অমিত শাহ জুটির সরকারকে সরিয়ে কেন্দ্রে ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’র সরকার গড়ার ডাক দেন মমতা।