বিশ্বভ্রমণের শর্তেই ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সল্টলেকের বাসিন্দা রথীন্দ্রনাথ দাস ও গীতাঞ্জলি দাস। তবে শর্ত ছিল বিবাহের পর বিশ্বভ্রমণের। তাঁদের পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমেই। বিয়ে করে কেবলমাত্র সংসার করার ইচ্ছে ছিল না কখনোই তাঁদের। বিয়ের পর নবদম্পতি মোটরবাইকে বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণে। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য বন্যপ্রাণীদের বাঁচানোর বার্তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া।
১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিলেন। দক্ষিণবঙ্গ ভ্রমণ করে রবিবার শিলিগুড়ি এসে পৌঁছন। তাঁরা আবার মঙ্গলবার বক্সার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে গিয়েও বণ্যপ্রাণী রক্ষার বার্তা দিতে প্রচার চালাবেন। এরপর বিদেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন, অবশ্যই বাইক-সহ। দেড় বছরের এই ভ্রমণে খরচ পড়বে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। আর্থিক সহযোগিতার কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন রথীন্দ্রনাথ। তাঁর পাশাপাশি পেয়েছেন নিজের কিছু বন্ধু বান্ধবকেও। পাশে পেয়েছেন একটি অটোমোবাইল সংস্থাকে। এই সফরের জন্য ২০০ সিসির বাইকটি দিয়েছে অটোমোবাইল সংস্থাটি।
এদিন শিলিগুড়িতে রথীন্দ্র বলেন, “ছোটবেলা থেকেই বন্যপ্রাণীদের প্রতি বিশেষ টান ছিল। তাদের বাঁচিয়ে রাখার বার্তা দিতে এর আগে ৩ বার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাইকে করে সচেতনতা প্রচার করেছি। একসময় আসামে একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজও করেছি। এখন সফরের টানে কাজ ছেড়ে দিয়েছি। বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে শিবির করেছি। ইচ্ছে ছিল স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার। সেই শর্তেই পরিচয় ও বিয়ে। তাই স্ত্রীও এবার আমার সঙ্গী”। স্ত্রী গীতাঞ্জলি দাস জানিয়েছেন, “বিয়ের আগে কোনওদিন বাইকেও উঠিনি। তবে মনের মধ্যে অনেকদিনের গোপন ইচ্ছেটা ছিলই। স্বামীর প্রস্তাবে তাই না করতে পারিনি। সঙ্গে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। রোজ প্রায় ১২ ঘণ্টা বাইকে থাকি। এভাবেই দু’জনে বাইকেই সংসার করছি। ইচ্ছে আছে, নিজেও একদিন এভাবেই বাইক চালাব”।
বাঘ বাঁচানোর বার্তা দিতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বাইকে করেই ভারত–সহ পাড়ি দেবেন ১৩টি দেশে। বাঘ বাঁচানোর বার্তা দিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য–সহ মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, রাশিয়া–সহ আরও বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৬০০ স্কুলে গিয়ে বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে শিবির করেছেন রথীন্দ্রনাথ।