রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্পে বিনিয়োগ এবং শিল্পের উন্নতি নিয়ে সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টা যেমন রাজ্যের ধুঁকতে থাকা শিল্পক্ষেত্রগুলিতে নয়া প্রাণ সঞ্চার করেছে, তেমনি গড়ে উঠছে নানা শিল্পতালুকও। এবার তাঁর নির্দেশেই রাজ্যে বড় শিল্পের জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমি চিহ্নিত করে রাখল রাজ্য। শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতেই রয়েছে ওই জমি।
ছোট ও বড় শিল্পের জন্য রাজ্যের হাতে মোট জমি রয়েছে ১০ হাজার একরেরও বেশি। তারই অর্ধেক বড় শিল্পের জন্য, জানাচ্ছে নিগম। শুধু জমি বরাদ্দ করাই নয়, সেখানে পরিকাঠামো গড়ে, শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সব রকমের সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্তও করে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এবারের শিল্প সম্মেলন থেকে মোট ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বাংলার। এটা যে নেহাত ফাঁকা আওয়াজ নয়, তা বোঝাতে জোরালো সওয়াল করেছেন রাজ্যের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রও। তিনি দাবি করেছেন, এর আগে যে চারটি শিল্প সম্মেলন হয়েছে, সেখানে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের মোট অঙ্কের ৪০ শতাংশ বাস্তবায়নের বিভিন্ন স্তরে আছে। ওই চার বছরে প্রায় সাড়ে ন’লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল রাজ্যে।
রাজ্যে শিল্পের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে, এমন জমিগুলির সাম্প্রতিকতম হিসেব পেশ করেছে প্রশাসন। সেখানেই প্রায় ১০ হাজার ২২৩ একর জমির মধ্যে ৫ হাজার ৪৭৬ একর জমি বড় লগ্নির জন্য তৈরি রয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য। শিল্প দফতরের কর্তারা বলছেন, প্রতিটি জেলা ধরে ধরে সরকার তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, গ্রোথ সেন্টার বা এস্টেটগুলিতে জমির পরিসংখ্যানই তুলে ধরেছে, তা নয়। ওই জমিগুলি প্রকৃত অর্থেই যে শিল্পের জন্য প্রস্তুত, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, রাস্তা তৈরি, বিদ্যুৎ সংযোগ বা সামাজিক পরিকাঠামো গড়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে বহু জায়গায় সরকার শিল্পের সুবিধার্থে কমন ফেসিলিটি সেন্টার, ট্রেনিং সেন্টার বা পণ্য বাজারজাতকরণের সুযোগ দিয়ে রেখেছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তাদের হাতে সর্বমোট ১৪৮টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বা এস্টেট রয়েছে। এর মধ্যে নিগমের হাতে থাকা জমিতেই বড় শিল্পের সম্ভাবনা দেখছে দফতর।
রাজ্যের মোট ২৪টি শিল্প তালুকে বড় শিল্পের জমি রাখা আছে। সেই তালুকগুলি রয়েছে হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং নদীয়ায়। এখানে মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ৫৭৪ একর। শিল্প দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এর মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বহু সংস্থা। কয়েকটি শিল্প পার্কে তো জমিও ফাঁকা নেই আর।