বিষ দিয়ে নাতনিকে হত্যা করেছেন ঠাকুমা-ঠাকুরদা। এই অমানবিক ঘটনা ঘটেছে কাঁকিনাড়ার কাঁটাডাঙায়। গতকালও অফিস যাবার আগে মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন বাবা দীপঙ্কর দে। অফিস যাবার আগে মেয়ে বাবার কাছে আঙুর খাবার আবদার করেছিল। সেইমতো আঙুর কিনেছিলেন বাবা, কিন্তু মেয়েকে দিতে পারলেন না।
এই ঘটনায় জগদ্দল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন উষসীর মা আত্রেয়ী। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি উষসীকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে।
দীপঙ্কর কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। ২০১২ সালে তিনি নিজে পছন্দ করে আত্রেয়ীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বাড়ির লোক কেউই সে বিয়ে মেনে নেননি এমনকি বিয়ের পর আত্রেয়ীকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন দীপঙ্কর। তারপর ২০১৫ তে তাঁদের কন্যা সন্তান আসার পর তাঁরা নিজের বাড়িতে আসেন। কিন্তু আত্রেয়ীর শ্বশুর-শাশুড়ি আত্রেয়ী ও তাঁর মেয়েকে দেখতে পারতেন না। উষসী কখনও দাদু-ঠাকুমার কাছে গেলেও তাঁদের সম্পর্কও তেমন সহজ ছিল না।
আত্রেয়ী জানান, এ দিন দুপুরে খাওয়ার পরে তিনি মেয়েকে নিয়ে শুয়েছিলেন। তখন তাঁর শাশুড়ি মেয়েকে ডাকেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে আমি ডাকতে যাই। মেয়ে নেমে এলে দেখি, ওর মুখ থেকে ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোচ্ছে। আমি জানতে চাইলে ও বলে, দাদু ইলিশ মাছ আর ভাত খাইয়েছে।’’ মেয়েকে এর পর তিনি ঘরে শুইয়ে বাথরুমে যান। ফিরে এসে দেখেন, উষসীর মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরচ্ছে। চোখ স্থির হয়ে রয়েছে। তারপর তিনি দীপঙ্করকে ফোন করেন। কলকাতা থেকে ফিরে আসেন দীপঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘বাবা-মা আমার স্ত্রীকে দেখতে পারতেন না। সেই প্রতিশোধই কি তাঁরা এ ভাবে তুললেন? দু’দিন আগে মেয়েটার জন্মদিন গেল, আর আজ মেয়ে নেই! আমি বাবা-মায়ের শাস্তি চাই।’’
স্থানীয় ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা সেখানে উষসীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দীপঙ্করের বাবা মনোরঞ্জন এবং মা মিনতি দে’কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তিনদিন আগেই মেয়ের জন্মদিন ছিল আর আজ মেয়ে নেই ভাবতেই পারছেন না উষসীর বাবা-মা।