মহারাষ্ট্রে লােকসভা ভােটে আসন সমঝােতা করার পরেও সেই আগের সুরেই বিজেপির ওপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে শিবসেনা। কিছুদিন আগেই গেরুয়া শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলে তারা মন্তব্য করেছিল, ‘রাজনৈতিক ফায়দার জন্য যুদ্ধের জিগির তুলবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। অভিযােগ উঠতে পারে, নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করতেই যুদ্ধের হাওয়া তােলা হচ্ছে।’ আর এবার মোদীর উদ্দেশ্যে তাদের কটাক্ষ, কুম্ভ মেলার শৌচ কর্মীদের পা ধুইয়ে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু ওদের পেটের খবর তিনি রাখেন কি? দিনের পর দিন হয়ত আধপেটা খেয়েই দিন কাটে ওই সমস্ত শৌচ কর্মীদের। সেটার খোঁজ কি রাখেন তিনি?
প্রসঙ্গত, কুম্ভ মেলায় পবিত্র স্নানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চরণ বন্দনা করেছিলেন। যার আক্ষরিক অর্থ হল পা ধুইয়ে দেওয়া। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই ভোটের আগে দেশবাসীর মন পেতেই কুম্ভ মেলার শৌচ কর্মীদের পা ধোয়ানোর প্রথা পালন করেছিলেন মোদী, এমনটাই মত বিরোধীদের। আর এবার প্রধানমন্ত্রীর এই ‘চরণ বন্দনা’কে কটাক্ষ করে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হয়েছে শরিক শিবসেনার মুখপত্র সামনায়। সেখানেই শিবসেনার তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘কুম্ভ মেলার শৌচ কর্মীদের পা ধোয়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো উচিত। কিন্তু প্রশ্নটা হল প্রধানমন্ত্রী ওদের পা ধুইয়ে দিচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু ওদের পেটের খবর রাখেন কি? দিনের পর দিন হয়ত আধপেটা খেয়েই দিন কাটে ওই সমস্ত শৌচকর্মীদের। সেটার খোঁজ রাখেন কি প্রধানমন্ত্রী?’
সামনায় আরও বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর ‘কর সেবা’ প্রকল্প তখনই সফল হবে যখন দেশের এই সমস্ত শৌচকর্মীরা পেট পুরে খেতে পারবে এবং নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রকল্পকে খোঁচা দিয়ে এ-ও বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতির পর্ব। হঠাতই কেন্দ্র সরকার কৃষকদের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করে দিয়েছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় নির্মিত বাড়িগুলির জন্য জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে সাফ জানিয়েছেন, বিজেপি তাদের ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতেই ভোটের আগে এই সমস্ত প্রকল্প চালু করছে। শুধু তাই নয়, নিজেদের দলকে লোকসভা নির্বাচনের বাড়তি সুবিধা দিতেই এমন বাজেট পেশ করা হয়েছে বলে মত শিবসেনা প্রধানের। স্বাভাবিকভাবেই শরিক দলের এমন সমালোচনার মুখে পড়ে বিপাকে গেরুয়া শিবির।