মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই দাবি করে থাকেন ‘এগিয়ে বাংলা’। গোটা দেশকে পথ দেখাচ্ছে এ রাজ্য। মমতার এমন দাবি যে ভ্রান্ত নয়, তার প্রমাণ আগেও মিলেছে কেন্দ্রীয় রিপোর্টে। আর এবার দেখা গেল গঙ্গা পরিশোধনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুরু করা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে গোটা দেশের একাধিক পুরসভাকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থান দখল করল বাংলারই এক পুরসভা।
প্রসঙ্গত, দেশের ৬ রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গঙ্গা নদী বয়ে গিয়েছে। ওই ৬ রাজ্য মিলিয়ে গঙ্গার ধারে মোট ৯৭টি পুরসভা রয়েছে। যার মধ্যে ৪১টি পুরসভাই রয়েছে মমতার বাংলায়। আর বাকি ৫৬টি পুরসভার মধ্যে ছিল অনেক বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুরসভাও। কিন্তু কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী গঙ্গা সাফাইয়ের কাজে তাদের পিছনে ফেলেই এক নম্বরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা পুরসভা।
যাতে কোনও রকমের দূষিত জল গঙ্গায় না পড়ে, সেজন্য গঙ্গার ধারে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বানিয়ে দূষিত জল পরিশোধন করা হয় রাজ্যের পুরসভাগুলির তরফে। শুধুমাত্র পরিশ্রুত জলই গঙ্গায় ফেলা হয়। আর বর্জ্য পদার্থ ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলা হয়। পাশাপাশি গোটা বাংলা জুড়েই গঙ্গার ঘাট সাজানো এবং গঙ্গার দু’ধারে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। এ কথা স্বীকার করছেন খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অফিসাররাই।
তাঁরা এ রাজ্যের গঙ্গার ধারে অবস্থিত পুরসভাগুলোর কাজ ঘুরে দেখেন এবং প্রশাসনের কাজ দেখে সন্তুষ্টও হন। আর মহেশতলা পুরসভার কাজ দেখে তো খুবই খুশি হন কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসাররা। শুধু তাই নয়, তৃতীয় একটি এজেন্সিকে দিয়েও প্রকৃত কী কাজ হয়েছে, তা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এবং সরেজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে প্রথম হিসেবে মহেশতলা পুরসভাকে চিহ্নিত করা হয়।
কেন্দ্রীয় নগরােন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্র পুরস্কার প্রাপ্তির কথা রাজ্য সরকারের নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্তকে জানিয়ে দেন। পাশাপাশি এ-ও জানান যে, এর জন্য এই পুরসভা কেন্দ্রীয় নগরােন্নয়ন মন্ত্রকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার পাবে। সেই বার্তা পেয়েই মহেশতলা পুরসভাকে ধন্যবাদ জানানো হয়। নগরোন্নয়ন দফতরের এক অফিসার বলেন, গঙ্গা দূষণ ঠেকানোর উদ্যোগ নতুন নয়। এর আগে ইউপিএ সরকারও গঙ্গাকে আবর্জনা মুক্ত করতে অ্যাকশন প্ল্যান কর্মসূচি নিয়েছিল।
অন্যদিকে, মহেশতলা পুরসভাকে রোল মডেল করেই বাকি ৯৬টি পুরসভাকে গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে আরও উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের বাকি যে ৪০টি পুরসভা রয়েছে, সেখানেও দ্রুতগতিতে কাজ চলছে বলে জানা গেছে।