পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার ঘটনায় কোণঠাসা পাকিস্তান। এমএফএন তকমা তুলে নিয়ে তাদের বাণিজ্যিক ভাবে ধাক্কা দেওয়ার পর, জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে দিয়েছে ভারত। চাপে পড়ে নয়াদিল্লীকে তুষ্ট করতে বৃহস্পতিবারই মুম্বাই সন্ত্রাসের ঘটনায় অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হাফিজ সঈদের জঙ্গী সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। আর এবার বহাওয়ালপুরে জইশের সদর দফতরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশের প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে পাকিস্তান। পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গী হানার পর স্বভাবমতো অস্বীকারের পর্ব চালালেও তাতে চিঁড়ে ভিজছে না। তার ওপর এবার পুলওয়ামা কাণ্ডের কড়া বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তাতে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গী সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদের নাম রয়েছে। একইসঙ্গে এই ধরনের নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, ষড়যন্ত্রী, সংগঠক, মদতদাতা ও আর্থিক সাহায্য করা প্রত্যেককেই বিচার করে শাস্তি দেওয়া দরকার বলে মন্তব্য করা হয়েছে। যা ইসলামাবাদের কাছে যথেষ্টই অস্বস্তিকর।
তাই চাপের মুখে তড়িঘড়ি শুক্রবার পাঞ্জাব প্রদেশের বহাওয়ালপুরে জৈশের সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে প্রাদেশিক প্রশাসন। কাজকর্ম চালাতে একজন প্রশাসকও নিয়োগ করা হয়েছে। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই পুলওয়ামায় কাণ্ডের ‘কঠোরতম’ নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ। ‘ঘৃণ্য ও কাপুরুষোচিত’ হামলার জন্য জৈশ-ই-মহম্মদের নাম করা হয়েছে। জৈশের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রসংঘ পুলওয়ামা হামলার নিন্দা করায় পাকিস্তান আরও বিপাকে পড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসলামাবাদ যে প্রবল অস্বস্তিতে, তার প্রমাণ মিলেছে শুক্রবার সন্ধ্যায়। পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, পাঞ্জাব প্রদেশের প্রশাসন বহাওয়ালপুরে জৈশের সদর দফতরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ওই ক্যাম্পাসে মাদ্রেসাতুল সাবির নামে একটি মাদ্রাসা ও জামা-ই-মসজিদ শুভানাল্লা নামে মসজিদ রয়েছে। আছে প্রায় ৬০০ ছাত্র এবং ৭০ জন শিক্ষক। সেখানে একজন প্রশাসকও বসানো হয়েছে। পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই পদক্ষেপ। আপাতত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ।