চলতি সপ্তাহেই মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শঙ্কুদেব পান্ডা। কিন্তু তাঁর যোগদানে মোটেই খুশি হননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, তা তখনই ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শঙ্কুদেব পান্ডা সত্যিই কোনও নেতা কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলীপ বলেছিলেন, ‘আদৌ কি উনি নেতা!’ এমনকি বারবার বিভিন্ন দলের বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে দল ভারী করায় ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকরাও।
‘যারা পাপ ধুয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য অন্য দল ছেড়ে বিজেপিতে ঢুকছেন। তাঁদের জন্য দল আবার দিচ্ছে এক্স-ওয়াই-জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা। অথচ তাঁদের কোনও যোগ্যতাই নেই সামান্য কাউন্সিলর হওয়ার।’ না এ তৃণমূল বা অন্য কোনও দলের নেতা-নেত্রীর বক্তব্য নয়। এমন মন্তব্যই এখন ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে খোদ রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে। তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের দলের তরফে ভিভিআইপি আতিথেয়তায় ক্ষোভ জমেছে রাজ্য বিজেপির আদি নেতাদের মনে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কিছু নেতা, শাসক দলের কথায় যারা ‘বেনো জল’ বা ‘আগাছা’, তারাই এসে যোগ দিচ্ছে বিজেপিতে। শুধু যোগদানই নয়, বিজেপিতে এলে মিলে যাচ্ছে বেশ হাইপ্রোফাইল সিকিউরিটি। সম্প্রতি, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। দলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা। মুকুল রায় পাছেন ওয়াই প্লাস। শীঘ্রই সেটা জেড হয়ে যাবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
এদিকে, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শঙ্কুদেব পান্ডার জন্যেও জুটিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা। এছাড়া আদি বিজেপির গুটিকয়েক জন হয়ত পান এই বিশাল নিরাপত্তা। বাকিরা সকলেই ব্রাত্য, যা নিয়ে ক্ষোভ জমেছে দলের অন্দরেই। উদাহরণ হিসাবে বলা যাতে পারে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কথা। বারবার হামলা হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও নিরাপত্তা নেই। ফলে ব্যাপক ভাবে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে বিজেপির অন্দরে। খোদ দলের নেতারাই এখন কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। বলছেন, ‘দল তো নয় যেন সিকিউরিটি এজেন্সি।’
পাশাপাশি, দলের তরফে যেভাবে যাকে খুশি বিজেপিতে জায়গা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের দলীয় নেতারা। মূলত শঙ্কুকে দলে নেওয়ায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতার কথায়, শঙ্কুর মতো যাদের বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে, শীর্ষ নেতারা কি দেখে এদের দলে নিচ্ছেন আমরা জানি না। এদের কোনও যোগ্যতাই নেই দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে সামান্য কাউন্সিলর হওয়ার। অথচ নিরাপত্তা দেখো ওয়াই প্লাস। শঙ্কুর পদ্মযোগে তিনি খুশি কিনা জানতে চাওয়া হলে দিন কয়েক আগেই দিলীপ বলেছিলেন, তিনি দুঃখীও নন।