দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। যা নিয়ে এমনিতেই বেজায় চাপে গেরুয়া শিবির। এবার সেই চাপ আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিতে উত্তর-পূর্বে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছেন রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রবাবু নাইডু, শরদ পাওয়াররা৷ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বিরোধীদের পরবর্তী বৈঠক হবে গুয়াহাটিতে৷
প্রসঙ্গত, দিল্লীতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিরোধীদের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, ২৬ ফেব্রুয়ারি আবারও তাঁরা বৈঠকে বসবেন৷ তখন এ-ও ঠিক হয়েছিল, দিল্লীতেই ওই বৈঠক হবে৷ কিন্তু সেই কৌশল পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্বে বৈঠক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ কারণ এতদিন পর্যন্ত দিল্লী বাদ দিয়ে কলকাতা, চেন্নাইয়ে একজোট হয়েছেন বিরোধী নেতারা৷ কিন্তু কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে বৈঠক করেননি৷ এ বার তাঁরা সেই কাজটাই করতে চাইছেন৷ উদ্দেশ্য, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে উত্তর পূর্বে গিয়ে সোচ্চার হওয়া৷
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব বিল এনে গোটা উত্তর পূর্ব ভারতকেই বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল বিজেপি৷ আসামে বিজেপির শরিক অসম গণ পরিষদ জোট ছেড়েছে৷ মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মণিপুর, ত্রিপুরা এবং অসমেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রবল প্রতিবাদ হয়েছে৷ যারা বিজেপির শরিক ছিলেন, তাঁরাও বিদ্রোহ করেছে৷ সবমিলিয়ে গোটা উত্তর-পূর্বের বড় অংশ নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিপক্ষে চলে গিয়েছিল৷ এমনকি চাপে পড়ে মোদী সরকার এ নিয়ে অর্ডিন্যান্স পর্যন্ত জারি করেনি৷ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিন তালাক, কোম্পানি আইন নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারির সিদ্ধান্ত হলেও নাগরিকত্ব বিল নেওয়া হয়নি৷ রাজ্যসভায় পাশ না হওয়ায় ষোড়শ লোকসভার সঙ্গে সঙ্গে সেই বিলেরও ইতি ঘটবে৷
বিজেপি আপাতত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আর হইচই না করে পরিস্থিতি সামলাবার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু তাদের সেই সুযোগ দিতে চায় না বিরোধীরা৷ নাগরিকত্ব বিলের সংশোধনী আসার পর গোটা উত্তর পূর্বে বিজেপি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে৷ অথচ এই বিল নিয়ে আসার আগে তারা রীতিমতো সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল এবং ধরা হচ্ছিল শরিক ও সহযোগী দলকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এখানে ২৫টি আসনের মধ্যে সিংহভাগেই জিতবে৷ কিন্তু নাগরিকত্ব বিল সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে৷ এখন তাই মমতা ও রাহুলের সঙ্গে দেশের সমস্ত বিরেধীরাই উত্তর-পূর্বে গিয়ে সেই নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে আক্রমণ করতে চায়৷