পুলওয়ামাতে বিস্ফোরণের পরে দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গাতে কাশ্মীরিদের ওপর অত্যাচার চলছে। তবে বাংলাতে কাশ্মীরিরা নিরাপদ আছেন। যদিও দেশের নানা জায়গাতে যেভাবে কাশ্মীরিরা নিগৃহীত হচ্ছেন তার প্রতিবাদে শ্রীনগরে বিক্ষোভ দেখালেন কাশ্মীরে কর্মরত অন্য রাজ্যের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। কাশ্মীরিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন চুপ, তা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। সকলেরই বক্তব্য তাঁরা যদি কাশ্মীরে ভালো ভাবে থাকতে পারেন তাহলে মোদী কেন কাশ্মীরিদের নিরাপত্তার দায় নেবেন না?
হরিয়ানা থেকে আসা জুতো নির্মাতা প্রসাদ বা পশ্চিমবঙ্গের খেলনা বিক্রেতা ইন্দ্রনীল বহুদিন কাশ্মীরে থাকেন। কখনও শীত পড়লে তাঁদের স্ত্রী-ছেলেমেয়ের জন্য জামাকাপড় ও কেরোসিন দিয়েছেন কাশ্মীরিরা। কেউ আবার ২০১৬ সালের অশান্তির সময়েও কাশ্মীরি প্রতিবেশীদের ভরসাতেই নিশ্চিন্তে দিন কাটিয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, এ সব ঘটনা কি যারা কাশ্মীরিদের হেনস্থা করছে তাদের মুখে চড়ের শামিল নয়? ওমরের প্রশ্ন, ‘‘কাশ্মীরিদের উপরে এমন সংগঠিত হামলা নিয়ে কি প্রধানমন্ত্রী কিছু বলবেন? নাকি কাশ্মীরের মতো উত্তরের রাজ্য নিয়ে উনি চিন্তিত নন?’’
বিহারের বাসিন্দা বিক্রম শ্রীনগরের গনি খান মার্কেটে পপকর্ন বিক্রি করেন। তিনি স্বীকার করছেন, হামলার পরে কাশ্মীরিদের হেনস্থার খবর শুনে প্রথমে ভয় পেয়েছিলেন। বললেন, ‘‘এখানে একটা ঘরে পাঁচ জন থাকি। কয়েক দিন ভয়ে ঘর থেকে বেরোইনি। প্রতিবেশী এক বৃদ্ধের গনি খান মার্কেটে দোকান আছে। উনি বুঝতে পেরেছিলেন, আমরা ভয়ে বেরোচ্ছি না। আমাকে ডেকে বললেন, এখানে কেউ তোমাদের গায়ে আঙুলও ছোঁয়াতে পারবে না। তোমরা আমাদের অতিথি।’’
১৫ বছর ধরে কাশ্মীরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা শিব কুমার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে সব সময়েই স্থানীয় মানুষ আমাদের সাহায্য করেন। আমরা নিজেদের বাড়িতে যতটা সুরক্ষিত এখানেও ততটাই সুরক্ষিত।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সারা দেশে গোলমাল হলেও কাশ্মীরে আমি কোনও হুমকির মুখে পড়িনি। সব ধর্মের মানুষের মধ্যে ঐক্যের নজির হল কাশ্মীর।’’