পুলওয়ামার জঙ্গী হামলার ঘটনায় দেশ জুড়ে এক অস্থিরতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটছে। ‘দেশভক্ত’দের রোষের মুখেও পড়েছেন বেশ কয়েকজন। দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে এমন পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বলে দিলেন, ‘ভারতবর্ষ কখনও উগ্রপন্থীদের দেশ হতে পারে না’।
অশান্ত সময়ে রাজ্যে অশান্তির বিরুদ্ধে বার্তা দিতে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিকেই বেছে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বললেন, ‘একজনকে দেখে সবাইকে বিচার করা ঠিক নয়। ভারত উগ্রপন্থার দেশ নয়। কোনওরকম হিংসা, হানাহানি, বিভেদ সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দিতে হবে।’ ভাষা শহীদদের স্মরণ করে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘মাতৃভাষার অধিকার ছিনিয়ে নিতে বাংলাই পথ দেখিয়েছে বিশ্ববাসীকে। বাংলার মাটিকে জানতে হলে, বাংলা ভাষা শেখা প্রয়োজন। আমরা সব ধর্ম, সব ভাষাকে সঙ্গে নিয়ে সম্প্রীতি বজায় রেখে থাকি। বাংলার যে কোনও ভাষাভাষীর মানুষের জন্য মুক্ত। মানুষ ভাল থাকলে, দেশও ভাল থাকবে। পরাজিত হবে বিভেদকামী শক্তি।
নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দল চাইছে দেশকে ভাগ করতে। কয়েকজন মানুষ এক নয়া ধর্ম তৈরি করে নিদান দিচ্ছে কে কোথায় থাকবে, কী খাবে, কী পরবে। এক দানবিক ও পাশবিক ধর্ম তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে’। মমতার কথায়, ‘বাঙালিরা সব ভাষাভাষীর মানুষকে ভালোবাসতে জানে, কোনও ভেদাভেদের রাজনীতিতে তারা বিশ্বাস করে না’।
নোট বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে এদিন ফের তিনি প্রশ্ন করেন,‘প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নোট বাতিলের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বন্ধ হবে। তাহলে কেন নোট বাতিলের পরও এমন হামলা চলছে?’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শুধু ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোই নয়। একে সামনে রেখে এমন সংকটকালে দেশে সম্প্রীতির আবহাওয়া বজায় রাখার বার্তাও দিতে ভুললেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মানুষকে উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
