মহারাষ্ট্রে লােকসভা ভােটে আসন সমঝােতা করেছে বিজেপি ও শিবসেনা। তারপরও অনেকটা আগের সুরেই বিজেপির ওপর চাপ তৈরি করল শিবসেনা। ‘রাজনৈতিক ফায়দার জন্য যুদ্ধের জিগির তুলবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। অভিযােগ উঠতে পারে, নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করতেই যুদ্ধের হাওয়া তােলা হচ্ছে।’ এনডিএ সরকারকে এবার এই মর্মেই সতর্ক করল শিবসেনা। সোমবার জোট ঘোষণার সময়ই শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন, তিনি এতদিন জোটের ‘মার্গদর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন এবং এখনও সেভাবে পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে চলবেন।
দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় শিবসেনা বলেছে, কাশ্মীরি পড়ুয়াদের নিশানা করা হচ্ছে। এতে সরকারের সমস্যা আরও বাড়বে। শিবসেনা মনে করিয়ে দিয়েছে, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পর শিখ-বিরােধী দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ায় কংগ্রেসকে এখনও পর্যন্ত তার মূল্য দিতে হচ্ছে। কাগজে আরও লেখা হয়েছে, ‘কিছুদিন আগে রাজনৈতিক মহলে অভিযোগ উঠেছিল, ভােটে ফায়দা লুঠতে ছোটখাটো যুদ্ধ বাধাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিযোগ আরও জোরদার হয় এমন
কোনও আচরণ করা উচিত নয়। জঙ্গী-হামলার জেরে গােটা দেশ ফুঁসছে। অনেকের সমালােচনা হচ্ছে। (কিন্তু) রাজনৈতিক সুবিধার জন্য যুদ্ধ এবং সন্ত্রাসবাদীর মতো শব্দ ব্যবহার করা অনুচিত।’
সেইসঙ্গে শিবসেনার আক্ষেপ, ‘প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলে কোন ই-মেল, কোথা থেকে তা এসেছে বের করে ফেলেন গোয়েন্দা কর্মীরা। অথচ একটা কনভয়ে হামলা রুখতে ব্যর্থ তারা।’ ২০১৪ সালের আগে মোদী দেশে যে কোন জঙ্গী-হামলার জন্য মনমোহন সিংয়ের সরকারকে দায়ী করতেন। সেই প্রসঙ্গে উদ্ধবের দল বলেছে, ‘দেশের যে কেউ এখন ভাবতেই পারেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের মূলােচ্ছেদ করবেন।’
এদিকে, শিবসেনা-বিজেপি-র আলোচনায় অংশ নেওয়া এক নেতা জানিয়েছেন, ‘২০১৪ সালের মতাে এবারও লােকসভা ভােটে কোনও হাওয়া নেই। আমাদের প্রত্যেকের সমমনােভাবাপন্ন দলের সমর্থন পাওয়া দরকার। মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সমর্থন খুব জরুরি।’ অন্যদিকে, কয়েক মাস ধরেই মহারাষ্ট্রে ২টি আসনের দাবি জানিয়ে আসছিল রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া। কিন্তু মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোটে তাদের জায়গা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে।
শুক্রবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ-উদ্ধব ঠাকরের বৈঠকের পর জোট ঘােষণা হয়ে গেছে। রাজ্যের মােট ৪৮টি আসনের মধ্যে ২৫টিতে বিজেপি এবং ২৩টিতে শিবসেনা লড়বে। এ প্রসঙ্গে আঠাওয়ালে বলেন, ‘বিজেপি-শিবসেনা জোটে আমাদের দলকেও শামিল করা উচিত ছিল। রাজ্যে ও কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে হলে আরপিআইয়ের সঙ্গে জোট দরকার। একসঙ্গে লড়াই করলে অন্তত ৪৩-৪৪ টি আসনে জয়ী হবে আমাদের জোট। আমাদের দলকে বাদ দিয়ে জোট ঘােষণা করায় দলিতরা খুশি নন।’