বছর দশেক আটকে থাকার পর টালিগঞ্জে কেএমডিএ-র ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে আবাসন তৈরির জট কাটল। প্রথমে দরপত্র নিয়ে ঝামেলা তারপর পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেওয়ায় টালিগঞ্জের গল্ফ ক্লাবের কাছে এই আবাসন প্রকল্প বন্ধ ছিল। গল্ফ গার্ডেনের ঝড়ো বস্তিতে দরিদ্র গৃহহীন বাসিন্দাদের স্বার্থে কেএমডিএ–র ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ওই আবাসন তৈরি করা হবে বলে রাজ্য প্রশাসন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বামফ্রন্ট আমলের শেষ দিকে তৎকালীন সরকার ‘বেসিক সার্ভিসেস ফর আরবান পুওর’ প্রকল্পে ঝড়ো বস্তির বাসিন্দাদের নিয়ে বস্তির লাগোয়া জায়গাতেই আবাসন তৈরি করবে বলে জানিয়েছিল। শর্তসাপেক্ষে দরপত্রের মাধ্যমে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে এই প্রকল্পের বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শর্তানুযায়ী কাজ না হওয়ায় ওই সংস্থা বাদ পড়ে। পরে তৃণমূল সরকারের আমলে সিদ্ধান্ত হয়, কেএমডিএ ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ওই আবাসন তৈরি করবে। প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল প্রশাসন।
ঝড়ো বস্তি কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর অন্তর্ভুক্ত। স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সরকারি আধিকারিক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই আবাসনের ফ্ল্যাট সমস্ত আইন মেনে বস্তিবাসীদের হস্তাস্তর করা হবে। সমস্ত তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে পুনর্বাসন এবং হস্তান্তর সংক্রান্ত কোনও জট আছে বলে মনে হয় না।’’
সম্প্রতি আলোচনায় ঠিক হয়, প্রথম পর্যায়ে ঝড়ো বস্তির ১৮০টি পরিবারের জন্য বাড়ি তৈরি করা হবে। পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি ৪০টি পরিবারের জন্য কাজ হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই জায়গাতেই ৪০টি পরিবারের থাকার অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে ওই প্রকল্পে আর কোনও সমস্যা থাকবে না বলে দাবি করছেন কেএমডিএ আধিকারিকেরা। এবিষয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আপাতত ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ঝড়ো বস্তিতে যে আবাসন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কোনও জট নেই। কয়েকটি পর্যায়ে এই কাজ হবে। যত দ্রুত সম্ভব এই প্রকল্প শেষ করা হবে।’’