লোকসভা ভোটের মুখে স্বস্তিতে নেই যোগীও! এবার অশান্তির আঁচ পৌঁছল মন্ত্রীসভার অন্দরেই। সুপারিশ না মানার প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগ করার হুমকি দিলেন উত্তরপ্রদেশের অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর। বৃহস্পতিবার লখনউয়ে তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভার একজন সদস্যের যখন সুপারিশই গ্রাহ্য হয় না তখন সেই দফতরের দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়াই শ্রেয়। মুখ্যমন্ত্রীই আমার দফতরের দায়িত্ব নিন।
এর পাশাপাশি যোগী সরকারের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ প্রদানেও ‘অসামঞ্জস্য’ নীতি নিয়ে চলছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। একমাত্র সরকারের ‘নেকনজর’-এ থাকলেই তা মিলছে। ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ স্লোগানের সঙ্গে এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বড্ড বেমানান। দেশে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগেই রাজভরের এই গোঁসা গেরুয়া শিবিরকে বেশ বেকায়দায় ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জোটসঙ্গী সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি (এসবিএসপি)। সেই দলের শীর্ষনেতা রাজভর যোগী মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাঁর কাঁধেই রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়নের ভার। রাজনীতির ময়দানে যাঁদের ভোটব্যাঙ্ক ৪৪ শতাংশের কাছেপিঠে। বেশ কিছুদিন ধরেই যোগী মন্ত্রিসভার সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছিল না। সম্প্রতি ‘উত্তরপ্রদেশ স্টেট ব্যাকওয়ার্ড কাস্টস প্যানেল মেম্বার’দের মনোনীত করার প্রশ্নে যোগী সরকারের সঙ্গে তাঁর সঙ্ঘাত চরমে ওঠে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এসবিএসপি’র তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মন্ত্রীর সুপারিশ করা প্যানেল না মানলে ‘অন্য পথ’ গ্রহণ করা হবে। আর সেই ‘অন্য পথ’ বলতে যে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ, তা রাখঢাক না করেই জানিয়ে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক অরুণ রাজভর। তিনি বলেছিলেন, আমাদের দাবি এবং সুপারিশ কার্যকর না হলে লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বিজেপি-বিরোধী জোটের হাত ধরতেও এসবিএসপি’র আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন অরুণ।
গতকাল ওমপ্রকাশ বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে যে কোনও রাজনৈতিক দলের কুর্সি দখলে মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে অনগ্রসর শ্রেণী। অথচ, তাঁরাই অবজ্ঞার পাত্র হয়ে থাকবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা কী তাঁদের শুধু ভোটের প্রয়োজনে ব্যবহার করব? প্রশ্ন তুলেছেন রাজভর। আর তাঁর সুপারিশ করা প্যানেল কার্যকর করার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার দফতর থেকে মোট ২৮ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। তার মধ্যে ২৭ জনের নামই ‘উধাও’ হয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। সত্যিই যদি তাই হয়ে থাকে, তা হলে দফতরের প্রয়োজনীয়তা কোথায়? আমারই বা মন্ত্রী থেকে লাভ কি? প্রশ্ন ওমপ্রকাশের।