মেডিক্যাল কলেজে এই প্রথম ডিক্টাফোনের মাধ্যমে ই-প্রেসক্রিপশন ব্যবস্থা চালু করা হল। রোগীকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকে প্রেসক্রিপশন লিখে দিতে হয়। অসুখ জটিল হলে, প্রেসক্রিপশনও দীর্ঘ। কিন্তু এত রোগীর ভিড়ে এই প্রেসক্রিপশন লিখে, সে বিষয়ে আলোচনা করে দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, এবার থেকে আর কোনও সমস্যা থাকবে না প্রেসক্রিপশন নিয়ে। এমনকী প্রেসক্রিপশন লেখার সময়ও এতটাই বাঁচবে, যে অনেক বেশি সংখ্যক রোগী দেখা যাবে। কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের এই উদ্যোগ দেশের মধ্যে প্রথম।
এই পদ্ধতি ব্যবহারে মুখে বললেই তা কম্পিউটারে লেখা হয়ে যায় আপনাআপনি। আপাতত অঙ্কোলজি বিভাগে চালু হওয়া এই ব্যবস্থায় চিকিৎসকেরা হাজারো রোগীর ভিড় সামাল দিচ্ছেন কম সময়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই অভিনব পদ্ধতিতে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে এক এক জন রোগীকে দেখে তাঁর প্রেসক্রিপশন তৈরি করতে কয়েক গুণ কম সময় লাগছে। ফলে চিকিৎসা পরিষেবার মানও বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। কারণ এই পদ্ধতিতে আরও অনেক বেশি নিখুঁত হচ্ছে প্রেসক্রিপশন, স্পষ্ট হচ্ছে রোগের বিবরণ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের উদ্যোগেই মেডিক্যাল কলেজে এমন ব্যবস্থা চালু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মেডিক্যাল কলেজের অঙ্কোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শিবাশিস ভট্টাচার্য বলছেন, “এভাবে ডিক্টাফোন ব্যবহার করে প্রেসক্রিপশন লেখার কাজ দেশে এই প্রথম হচ্ছে। আমরা মুখে যা বলছি, তা-ই লেখার হরফে ফুটে উঠছে স্ক্রিনে। প্রিন্ট বার করলেই হল। লিখতে হচ্ছে না, বারবার বোঝাতে হচ্ছে না। দশ ভাগের এক ভাগ সময় লাগছে রোগী প্রতি। অনেক নিখুঁত ভাবে অনেক বেশি রোগীকে পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে।”
বস্তুত, প্রতি দিনই হাজার হাজার রোগীর লাইন পড়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে। তাঁদের সামাল দিতে, চিকিৎসা করতে নাস্তানাবুদ হন চিকিৎসকেরা। আপাতত মেডিক্যাল কলেজের একটি বিভাগ সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে ডিক্টাফোনের মাধ্যমে। চিকিৎসকেরা মুখে বলছেন পরামর্শ, ওষুধের নাম, চিকিৎসা পদ্ধতি। কম্পিউটার সেটাই লিখে দিচ্ছে ছাপার হরফে।
স্বাস্থ্য দফতরের আশা, এর পরে গোটা মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যান্য হাসপাতালগুলিতেও এই পদ্ধতি চালু করা গেলে অনেক সময় বাঁচিয়ে দেবে এই প্রযুক্তি।