রোজকার ভীড়ে ঠাসা জীবনে হঠাৎ করে কানে আসা কোনো কথায় কি কপালে ভাঁজ পড়ছে? মনে অনবরত বুনে চলেছেন সন্দেহের জাল? হোয়াটসঅ্যাপে হাজারো বার্তার মধ্যে কোনো কোনো বার্তায় লোভ জন্মাচ্ছে নাকি উদ্বেগের কারণ হচ্ছে? তাহলে আপনাকে সাবধান হতে হবে। নিজের বুদ্ধি দিয়ে সমস্তটাকে বিবেচনা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্দেহজনক বা উজবুকি কোনো কথাই একেবারে বিশ্বাস না করাই উচিত কারণ তার জেরেই ঘটে চলেছে একের পর এক ঘটনা রাজ্য জুড়ে। ছেলেধরা সন্দেহে গণপ্রহারে মৃত্যু কিংবা চুরি সন্দেহে বেধরক মার, ভবঘুরেকে গণপিটুনি এসব এখন রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রবীণ মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, “মানুষের স্বাভাবিক মনোবৃত্তি চট করে স্রোতের বাইরে যেতে চায় না। অন্যের কথায় গা ভাসানোয় বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে মানুষ। নিজে বিশ্বাস করার পাশাপাশি চারদিকে ছড়ায়”।
এই গুজবের ব্যাপারে আমজনতাকে সাবধান করে চলেছে পুলিশ। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও অনেক গুরুত্বহীন খবর কিংবা যুক্তিহীন, অসত্য খবর ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের কাছে।
পূর্ব কলকাতার ওসি এবিষয়ে বলেছেন, “তথ্যটা সত্যি না গুজব, তা জানবার জন্য ইন্টারনেট অত্যন্ত ভালো মাধ্যম। নিদেনপক্ষে থানাতেও আসতে পারে মানুষ। কিন্তু এই বিষয়ে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি”। সমাজতত্ত্ববিদ প্রশান্ত রায় জানান, “গুজব কখনও এমনি এমনি জন্মায় না, সবসময়ই তার জন্ম দেওয়া হয় নির্দিষ্ট কোনো স্বার্থ নিয়ে”।
“যে তথ্য জেনে বা শুনে মনে রাগ, ঘৃণা, ভীতি জন্মায় তা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা উচিত নয়। সেগুলো সাধারণত গুজবই হয়” মত সাইবার বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায়চৌধুরীর। অথচ কোনো বিষয় যুক্তি দিয়ে বিচার না করে বিশ্বাস করা এবং চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া, এই দু’টি সহজ কাজ করলেই গুজবের অকালমৃত্যু ঘটতে পারে।