বাংলায় বাম-রাম জোট নিয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। দুই দল মিলে বাংলার একাধিক পঞ্চায়েতও দখল করেছে। এবার বাম-রাম জোটের সেই বন্ধুত্ব দেখা গেল লোকসভাতেও। সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্যের পুরো সময়টা টেবিল চাপড়ে গেলেন বিজেপির সাংসদেরা। এমনকি সেলিমের আনপার্লামেন্টারিয়ান শব্দেও আপত্তি না জানিয়ে উৎসাহ দিয়ে গেলেন অর্থ ও রেল মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও পুরো ট্রেজারি বেঞ্চ।
বুধবার ছিল লোকসভার শেষ দিন। সিপিএমের মহম্মদ সেলিম যখন বক্তব্য রাখছেন তখন সিপিএমের কোনও নেতা সংসদে ছিলেন না। সেলিমের পেছনের আসন পুরো ফাঁকাই পড়ে ছিল। কিন্তু সিপিএমের সেই শূণ্য স্থান পূরণের দায়ভার নিয়েহিলেন বিজেপির সাংসদেরা। এবং তা তাঁরা করলেনও। বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে গেলেন সেলিম, কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই। নিন্দুকেরা বলছেন, লোকসভায় অংশ নিতে গেলে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে হয়। আগামী দিনে সেই সুযোগ সেলিম নাও পেতে পারেন। তাই নিজের বক্তব্যের পথসভার ঢঙে আগাগোড়া নিজের বক্তব্যে খেউর করে গেছেন সেলিম।
এখানেই শেষ নয়। সমালোচকদের অভিযোগ, সংসদের নিজস্ব কিছু নিয়ম-নীতি আছে। লোকসভার সদস্য নয় এমন কাউকে নিজের বক্তব্যে টেনে আনা যায় না। সেলিম সে সবের থোড়াই কেয়ার করেছেন। নিজের ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেনে এনেছেন। ‘চোর’-এর মতো অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন। আর সেই বক্তব্য সমর্থন জানিয়ে বিজেপি সাংসদেরা টেবিল চাপড়ে গেছেন। এমনকী স্পিকারও কোনও আপত্তি জানাননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, লোকসভার এই আচরণ থেকেই পরিষ্কার শীর্ষ নেতৃত্ব স্বীকার না করলেও প্রকাশ্যেই বাম-রাম জোট কতটা গাঢ়। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে এখন বিজেপির মাথাব্যাথার কারণ সেটাও পরিষ্কার হয়ে গেছে। কারণ, অসংসদীয় শব্দ উচ্চারণ করে সেলিম শুধুই মমতার সমালোচনা করে গেছেন। আর এতেই খুশি গেরুয়া শিবির। তারা টেবিল চাপড়ে সঙ্গত দিয়ে গেছেন সেলিমকে।