তৃণমূলকে এভাবে শেষ করা যাবে না। হাঁসখালির বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুন করে যারা ভাবছে নদীয়ায় তৃণমূলকে শেষ করবে, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। রবিবার সাফ জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূলের নদীয়া জেলায় পর্যবেক্ষক তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
গতকাল কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর হাসপাতালে নিহত সত্যজিতের দেহের পাশে দাঁড়িয়ে পার্থ আরও বলেন, ‘এরা জানে না, তৃণমূল দলটার নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎকে যারা খুন করেছে, তারা যে দলের এবং যত বড় নেতাই হোক, ছাড় পাবে না। প্রশাসনকে বলা হয়েছে, কারণ অনুসন্ধান করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে। তবে আমরাও যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দিই।’
ঘটনায় যে মুখ্যমন্ত্রী শোকস্তব্ধ, সে কথা জানিয়ে পার্থ বলেন, ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী বিজেপি ভাবছে, একটা খুন করে নেতৃত্বের অভাব ঘটিয়ে ভোট করাবে। বহু রক্তের বিনিময়ে একাধিকবার মার খেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে পরিবর্তন এনেছেন। বিজেপি কালো মুখগুলিকে সামনে এনে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সন্ত্রাস করতে চাইছে। আমরা তা হতে দেব না। আমরা রাজনৈতিকভাবে ঘটনার মোকাবিলা করব।’
গতকাল বিজেপিকে ‘প্যারাস্যুট পার্টি’ বলেও কটাক্ষ করেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে মানুষের যোগ নেই। তারা প্যারাস্যুটে করে নামে। আবার উড়ে চলে যায়। এ রাজ্যে ওদের নেতা নেই। তাই প্যারাস্যুটে করে অন্য রাজ্যের নেতা নামাতে হয়।’ শোকের আবহের মধ্যেও তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘বাংলায় আমাদের উন্নয়নই শেষ কথা বলবে। মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। তাঁদের বোঝাতে হবে, এই ধরনের রাজনীতি ফিরে এলে কত ক্ষতি হবে।’
গতকাল এসেছিলেন তৃণমূলে নদিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘বিজেপি এই খুনের পিছনে জড়িত।’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তও বলেন, ‘এই খুনের পিছনে দায়ী বিজেপিই।’ নিহত বিধায়কের ভাইরাও খুনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। মৃত সত্যজিৎ সম্পর্কে বলতে গিয়ে পার্থ বলেন, ‘সত্য আমার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছেও বড় প্রিয় ছিলেন তিনি। ক’দিন আগেও আমার বাড়ি গিয়েছিলেন। সত্যর মতো লড়াকু নেতা নেই, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।’
সত্যজিতের দেহ জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর কৃষ্ণনগরের দলীয় অফিসে নিয়ে আসা হয়। তাঁ বাড়িতে যান মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, রত্না ঘোষ ও উজ্জ্বল বিশ্বাস। ছিলেন জেলা সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, বিধায়ক মহুয়া মৈত্ররা।
বাড়িতে সত্যজিতের স্ত্রী রূপালি ও মা অঞ্জনাদেবীর সঙ্গে কথা বলেন পার্থ। তিনি তাঁদের বলেন, ‘দল আপনাদের সঙ্গে আছে। দোষীরা শাস্তি পাবেই।’ সত্যজিৎকে বিদায় জানানোর জন্য মাঠে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। বহু মানুষ সেখানেই জনপ্রিয় বিধায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানান। অন্যদিকে, আজ, সোমবার কৃষ্ণনগরে আসার কথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।