গত বছরও তিনি হাজির ছিলেন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে। আর এ বছরও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ তিনি ফেরাতে না পেরে ছুটে এসেছেন। তিনি আর কেউ নন, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কর্ণধার তথা দেশের একেবারে প্রথম সারির শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি। গতবার বাণিজ্য সম্মেলনের বক্তৃতায় মুকেশ বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওয়েস্ট বেঙ্গল বেস্ট বেঙ্গল হবে।’ আর এবার এসে তিনি বললেন, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এখন বেস্ট বেঙ্গল৷’
এদিন মঞ্চে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই মুকেশ বলেন, কলকাতায় আবার আসতে পেরে আমি খুশি৷ এরপরই দেশের এই প্রথম সারির শিল্পপতি বলেন, “জয় বিশ্ব বাংলা। ‘সিটি অব জয়’ এখন ‘সিটি অব হোপ’। ওয়েস্ট বেঙ্গল আজ বেস্ট বেঙ্গল৷ মমতাদির নেতৃত্বে বাংলা এগোচ্ছে৷ বাংলার এই বদলকে স্বাগত জানাচ্ছি৷ বাংলায় অনেক সম্ভাবনা আছে৷’ তিনি আরও বলেন যে, ‘বর্তমানে দেশের মধ্যে বাংলার জিডিপি সবথেকে বেশি। এছাড়াও কৃষিক্ষেত্রে কৃষকদের আয় এখন অনেকটা বেড়েছে। এই দশকের শুরুতে রাজ্যের অর্থনীতির পরিমান ছিল ৪ লক্ষ কোটি টাকা। এখন তা ১০ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সেই জন্য অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীকে। বাংলার এখন ডিজিটাল বিপ্লব চলছে।’
এর পাশাপাশি বাংলা কীভাবে রিলায়েন্সের বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠছে তা বলতে গিয়ে মুকেশ জানান, ‘২০১৬ সালে আমি প্রথম এসেছিলাম এই সম্মেলনে। তখন এ রাজ্যে আমাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪৫০০ কোটি। আর তিন বছর পর তা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকায়। আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে এ বছর। জিও গিগা ফাইবার প্রোজেক্টের মতো বেশ কয়েকটি প্রকল্প করা হবে। প্রত্যেক বাড়িতে স্মার্ট ফোন আসবে। জিও-র ৫০০টি রিটেল শপ হবে। সামনের দু’বছরে ৫০ হাজার যুবক-যুবতী চাকরি পাবেন। এ রাজ্যে ১ হাজার জিও সার্ভিস পয়েন্ট তৈরি করতে চাইছি আমরা।’ এই ঘোষণার পরেই তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলা আগামীদিনে ‘সুইট বেঙ্গল’-এ পরিণত হবে। এ রাজ্যের সঙ্গে রিলায়েন্সের মধুর সম্পর্ক বজায় থাকবে বলেই আশ্বাস দেন তিনি।
আম্বানি ছাড়াও এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন দেশের আরও অনেক প্রথম সারির শিল্পপতি। তাঁরাও অনেক বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন। যেমন জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দল বলেন, এই রাজ্যে ১ হাজার মেগাওয়াট পাম্প স্টোরেজের প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। এটি একটি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্ট। এ ছাড়া শালবনিতে সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন দ্বিগুণ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। মিত্তল গোষ্ঠীর কর্ণধার রাজন ভারতী মিত্তল জানিয়েছেন, বাংলায় আরও ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছেন তাঁরা। এই বিনিয়োগের ফলে ৩০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। আবার এ রাজ্যের নামকরা শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা জানিয়েছেন, বাংলায় ২৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা। আগামী দিনে আরও বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।