অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে বিজেপি ইদানীং অত্যাধিক হইচই করলেও, বিগত কয়েক বছরে দেশে মুসলিম অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা কত, তার কোনও হিসেবই নেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে৷ সেইসঙ্গে বাংলায় যা তাঁদের অন্যতম নির্বাচনী বিষয়, তাঁরা কোন রাজ্যে কতজন আছেন তার হিসাবও কেন্দ্রর কাছে নেই৷
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানিয়েছেন, বেআইনি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়া চোরাগোপ্তা ঢোকে৷ সে জন্যই এই অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে কোনও সঠিক তথ্য তাঁদের হাতে নেই৷ প্রসূনবআবুর প্রশ্ন ছিল, ২০১০ সাল থেকে কতজন মুসলিম বেআইনিভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে তার কোনও সংখ্যা কি সরকারের হাতে আছে? থাকলে প্রতি বছরের বিবরণ এবং নাগরিকত্ব বিল থেকে মুসলিমদের বাইরে রাখার যুক্তিটা কী? প্রথম প্রশ্নের জবাবেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্বীকার করে নিয়েছে, তাঁদের এই সংখ্যাটা জানা নেই৷
প্রসঙ্গত, দেশে যে অনুপ্রবেশ হয়, এর প্রধান দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরই বর্তায়৷ কারণ, সীমা রক্ষার কাজটা সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই৷ সেখানে রাজ্যের কোনও ভূমিকা নেই৷ সেই নজরদারি পেরিয়ে কী করে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকতে পারে, তার কোনও জবাবই এতদিন কেন্দ্রের মোদী সরকার দেয়নি৷ এ নিয়ে কেবল রাজনৈতিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলছে। যেমন তা নিয়ে কথা উঠতেই নাগরিকত্ব বিলের পক্ষে বলতে শুরু করে দিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে সেই সব দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চান-সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভারতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই আশ্রয় নিতে বাধ্য হন৷ তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য বিল আনা হয়েছে৷ এই সব দেশ থেকে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যদি আইনি পথে নাগরিকত্বর জন্য আবেদন করেন, সেখানে ধর্ম দেখা হয় না৷ যে কোনও ধর্মের লোক এই আবেদন করতে পারেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রসূন বাবুর প্রশ্ন একপ্রকার এড়িয়েই গেলেন। মন্ত্রীর কাছ থেকে এই উত্তরও পাওয়া গেল না যে, কেন নাগরিকত্ব বিল থেকে মুসলিমদের বাইরে রাখা হচ্ছে।