চুক্তির পর অগ্রিম মিটিয়ে দেওয়া স্বত্বেও, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে জন্য হেলিকপ্টার দেওয়া হচ্ছে না তৃণমূলকে। ধর্না মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তথ্য জানিয়ে বলেন, এটা বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। যে সংস্থার সঙ্গে হেলিকপ্টার চুক্তি হয়েছিল, বিজেপির চাপেই তারা অগ্রিম অর্থ ফিরত দিয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘এটা গণতন্ত্র! ওরা (বিজেপি) কী চাইছে? ওরা একাই প্রচার চালাবে’। তাঁর কথায়, ‘নির্বাচনের দিন ঘোষণা হলে এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারকে জানাব’।
যে ২৩ টি দলকে নিয়ে ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’র ব্যানারে বিরোধীরা জোট বাঁধতে চলেছে, তার সব কটি দলকে সতর্ক করে মমতার পরামর্শ, ‘তৃণমূলের সঙ্গে হয়েছে। আপনারা সজাগ ও সতর্ক থাকুন। দেশের জন্য এটা ঠিক নয়’। মমতার অভিযোগ, ‘অনেক এমপি আমায় বলেছেন, এখন দিল্লীতে পোস্টার ছাপতে গেলে কেউ রাজি হচ্ছে না। ভয় পাচ্ছেন, বলছেন, বিজেপি জানলে মুশকিল হবে’।
ধর্না মঞ্চে মমতা বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারের জন্য বিজেপির মতো বড় পার্টিরা অনেক হেলিকপ্টার ভাড়া নেয়। এখন রাজ্যে বিজেপি নেতারা তো হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরছেন। ভোটের সময় আমাদের মতো ছোটো পার্টিরা দু-তিনটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করি। দ্রুত সর্বত্র পৌঁছনোর জন্য এই ব্যবস্থা। এর মধ্যে একটা আমার জন্য নির্দিষ্ট থাকে। বাকি ২টো পার্টির অন্যরা ব্যবহার করে’। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অভিযোগ করছি, রাজনৈতিক বৈরিতার নমুনা দেখুন’। কী সেই বৈরিতা? মমতা বলেন, ‘লোকসভা ভোটের প্রচারের জন্য একটি সংস্থার থেকে ভাড়ায় হেলিকপ্টার নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি আমরা চুক্তিবদ্ধ হই। তাদের অগ্রিম টাকাও দিয়ে দেওয়া হয়। সব ঠিকই ছিল। ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সভা এবং তাকে ঘিরে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়া মাত্রই শুরু হল প্রতিহিংসা। নিয়মানুযায়ী চুক্তি থাকা স্বত্বেও হঠাৎই গত ১ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট সংস্থা জানায়, হেলিকপ্টার দেওয়া যাবে না তৃণমূলকে। এমনকী অগ্রিম বাবদ দেওয়া অর্থও তারা ফেরত দেয়। চাপে পড়েই যে তারা এটা করেছে বোঝাই যাচ্ছে’।
তাহলে তৃণমূল প্রচার করবে কীভাবে? তার উত্তরও দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘কষ্ট করতে জানি। মানুষের কাছে পৌঁছতে প্রয়োজনে হেঁটে যাব। যাব গাড়িতে আর সাইকেলে চেপে। সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে পৌঁছে যাব আমজনতার দরবারে’। গেরুয়া শিবিরকে প্রত্যয়ী মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, হেলিকপ্টার কেড়ে নিতে পার, মানুষের মন থেকে তাড়াবে কী করে?