সিবিআই-কে লেখা সারদা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেনের চিঠি ফাঁস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার ধর্মতলার ধর্না মঞ্চ থেকে সুদীপ্ত সেনের লেখা সেই চিঠি পড়ে শোনান মমতা। চিঠিতে আসাম বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা হেমন্ত বিশ্বশর্মার নাম উল্লেখ রয়েছে। সুদীপ্ত সেন পালানোর আগে সেই হেমন্ত বিশ্বশর্মার নাম নিয়ে সিবিআইকে চিঠি লিখে গিয়েছিলেন।
৬ এপ্রিল ২০১৩ সালে লেখা ওই চিঠিতে হেমন্ত বিশ্বশর্মার নাম উল্লেখ করে সুদীপ্ত সেন লিখেছেন, শেষ ছ’মাস তাঁর কাছ থেকে নগদ ৩ কোটি টাকা নিয়েছিলেন হেমন্ত। মমতার অভিযোগ, সেই চিঠির সূত্র ধরে বেশ কয়েকবার হেমন্ত বিশ্বশর্মার বাড়িতে রেডও করেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু যেদিন হেমন্ত বিজেপিতে যোগ দেন সেদিন থেকে সারদাকাণ্ডের তদন্তে আর হেমন্তের নাম দেখা যায়নি। এমনকী চার্জশিটেও হেমন্তের নাম ছিল না।
চিঠিতে সুদীপ্ত সেন যা লিখেছেন তাঁর বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, যিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাঁর নাম হিমন্ত বিশ্বশর্মা। উনি গত কয়েক মাস ধরে আমার কাছ থেকে অন্তত তিন কোটি টাকা নিয়েছেন, পুরোটাই প্রায় নগদ। আর কিছু ভাউচার সই করে নিয়েছেন ওনার অফিসের আধিকারিকরা’।
হেমন্ত বিশ্বশর্মা বর্তমানে আসামের উপমুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা উত্তর পূর্বাঞ্চল গণতান্ত্রিক জোট (নেডা) আহ্বায়ক৷ তাঁর নেতৃত্বেই উত্তর পূর্ব ভারতে বিজেপি নিজেদের অবস্থান পাকা করেছে৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস ত্যাগী হেমন্ত বিশ্বশর্মা।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বিজেপি করেন বলেই কী হেমন্ত বিশ্বশর্মার সাত খুন মাফ? একই ঘটনা ঘটেছে মুকুল রায়ের ক্ষেত্রেও। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী এবং বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেও সারদাকাণ্ডে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল। সিবিআই তদন্ত শুরু করার পর বেশ কয়েকবার সিজিও কমপ্লেক্সে মুকুল রায়কে ডেকে জেরাও করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত জোরদার হয়। কিন্তু যে মুহূর্তে মুকুল বিজেপিতে যোগ দেন, তার একমাসের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সারদাকাণ্ডের তদন্ত হিমঘরে চলে যায়। সারদাকাণ্ডের তদন্ত থেকে বাঁচার জন্যই এই দুই নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠছে।
এদিকে এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে আসামে। মমতার অভিযোগের পরই আসামের সিবিআই অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে সেখানকার কংগ্রেস নেতারা।