মঙ্গলবার সকালে কলকাতা পুলিশ কমিশনার-সিবিআই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরেই ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই রায় গণতন্ত্রের জয়। আমাদের নৈতিক জয়। আর তারপর থেকেই তাঁর শরীরী ভাষায় দেখা যায় দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাস।
আজ সকাল থেকেই ধর্নামঞ্চের সামনে শুরু হয়ে যায় তৃণমূল কর্মীদের উৎসব। মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নামঞ্চের সামনে ভিড় জমিয়েছেন জেলা থেকে আসা কর্মীসমর্থকরাও। মাঝে মাঝেই মাইক হাতে বক্তৃতা করছেন মমতা। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পর বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত নাতিদীর্ঘ হলেও বেশ কয়েকবার বক্তৃতা দেন তিনি। একবার বলেন, ‘এই যে এখানে আমার পাঞ্জাবী ভাইয়েরা আছেন! আপনাদের একটা কথা আছে না পাঙ্গা! আমার সঙ্গে পাঙ্গা নিলেই আমি চাঙ্গা হয়ে যাই।’
রবিবার রাতে লাউডন স্ট্রিটে নগরপালের বাংলো থেকে বেরিয়েই সোজা ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে চলে আসেন মমতা। বসে পড়েন ধর্নায়। সবটাই হয়েছে হঠাৎ। তাই মঞ্চ ছিল না। রবিবার মাঝরাত পর্যন্ত খোলা আকাশের নীচেই কাটান তিনি। তারপর তড়িঘড়ি মঞ্চ বাঁধা হয়। খবর পেয়েই রাহুল গান্ধী থেকে তেজস্বী যাদব, চন্দ্রবাবু নায়ডু থেকে অখিলেশ যাদব, এমকে স্ট্যালিন, দেশের একাধিক বিজেপি-বিরোধী শক্তির শীর্ষ নেতা ফোন করে সংহতি জানান মমতাকে। সোমবার কলকাতায় আসেন তেজস্বী আর কানিমোঝি। আজও ধর্নামঞ্চে এসে যোগ দিয়েছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু।
রবিবার সারারাত চোখের পাতা এক করেননি মমতা। ওদিন কিচ্ছুটি দাঁতে না কেটেও একের পর এক ঝাঁঝালো বক্তৃতায় তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এর শেষ দেখে ছাড়বেন। অবশেষে আজ নৈতিক জয় হল তাঁর। তবে গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার এই লড়াই যে চলবে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে মমতার ওই একটি কথাতেই, ‘আমার সঙ্গে পাঙ্গা নিলেই আমি চাঙ্গা হয়ে যাই।’