রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানা হয়। এর পরেই গণতন্ত্র বাঁচাতে ধর্মতলায় সত্যাগ্রহ শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। দল থেকে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত হয়। রাত থেকেই জেলায় জেলায় মিছিলে সামিল হন তৃণমূল কর্মী–সমর্থকরা। চলে বিক্ষোভ, অবরোধ, মিছিল। মমতা পাশে পেয়েছেন দেশের প্রায় সমস্ত বিরোধী পক্ষকে৷ আজ ইতিমধ্যে এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে সুপ্রীম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে সিবিআই৷ মমতা যে সত্যের জন্যে লড়ছেন এবার সেই লড়াইতে সামিল হল পাহাড়ও৷
রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের কোনও রাজনৈতিক দল এভাবে রাস্তায় নামেনি৷ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয়পন্থীরা যা করলেন, তেমন ঘটনা দেখেনি দার্জিলিং পাহাড়। স্বশাসন বা পাহাড় উন্নয়নের কোনও বিষয় নয়, নিজেদের দাবিদাওয়াও নয়, বরং মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না অবস্থানের সমর্থন জানাতে পাহাড়ের পাকদণ্ডী বেয়ে মিছিলে উত্তাল হল মোর্চা।
তবে শুধু রাস্তায় নেমেই ক্ষান্ত থাকতে চাইছে না মোর্চা। বিনয় তামাং, অনীত থাপা, শঙ্কমণি সুব্বারা কলকাতায় রওনা হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে। তাঁদেরও ধর্নায় দেখা যাবে। এমনকী সেখানেই পাহাড় নিয়ে বৈঠক করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান বিনয় তামাং।
পাহাড়ের দীর্ঘ ইতিহাসে বারবার আন্দোলনে গর্জে উঠেছে স্থানীয় মানুষ। একদিকে যেমন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে উত্তাল হল পাহাড়, অন্যদিকে পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মোদির কুশপুতুল পুড়িয়ে বিজেপি বিরোধিতারও বার্তা দিলেন তাঁরা। এদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই পাহাড়ের বিভিন্ন দেওয়ালে নানারকম পোস্টার দেখা যায়। রক্তে লেখা পোস্টারও চোখে পড়ল। সেখানেও গুরুং ও বিজেপি বিরোধিতা দেখা গেছে।
সোমবার সকাল থেকেই দার্জিলিং, মিরিক, কার্শিয়াং ও কালিম্পঙের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এবং সিবিআইয়ের স্পর্ধার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মোর্চা। পোড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মোর্চা প্রধান বিনয় তামাং নিজেই। এদিকে, ততক্ষণে পাহাড় জুড়ে সিবিআই ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পোস্টারও সাঁটানো শুরু হয়ে গেছে। বিনয় তামাং পরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ‘রবিবারের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এসব মানা যায় না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পাশে আছি। মঙ্গলবারেই কলকাতা পৌঁছব।’