তিন দিনের টানাপোড়েনের পর জয় হাসিল করে নিল রাজ্য সরকার। কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআই হামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, আপাতত রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না। একইসঙ্গে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে সিবিআই কোনওভাবেই বাধ্য করতে বা গ্রেফতার করতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরেই ধর্না মঞ্চে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এই জয় তৃণমূলের নৈতিক জয়।সংবিধানের জয়৷ গণতন্ত্রের জয়, মানুষের জয়’। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘সিবিআই বাংলা থেকে কাউকে গ্রেফতার করলেই উড়িষ্যায় নিয়ে যাচ্ছে৷ এটা চলতে পারে না৷’ কেন্দ্রীয় সরকার নিরপেক্ষ নয় বলে অভিযোগ করেন মমতা৷
এই নৈতিক জয়ের কারণ হিসাবে ৪ টি তথ্য দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। সেগুলির মধ্যে প্রথমত, সুপ্রিম কোর্ট পুলিশ কমিশনার এবং সিবিআই-কে একটি নিরপেক্ষ জায়গায় বৈঠক করতে বলেছে। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ওই নিরপেক্ষ জায়গাটি হল শিলং।
দ্বিতীয়ত, বাংলায় সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং সাংবিধানিক সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দেশের শীর্ষ আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিল কেন্দ্র। আদালত সেই দাবিকে নাস্যাৎ করে দিয়েছে।
তৃতীয়ত, কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে সিবিআই কোনওভাবে বাধ্য করতে পারবে না কিংবা তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থত, আদালত অবমাননার ব্যাপারে আদালত মুখ্যসচিব, ডিজি, এবং সিপিকে ১৮ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দিতে বলছে। ২০ তারিখ আবার শুনানি হবে। সেই অনুযায়ী, কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে ব্যক্তিগত হাজিরা দিতে হবে কিনা এবং সেই সংক্রান্ত আদেশ সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল জানিয়ে দেবেন।
দেশের শীর্ষ আদালতের দেওয়া এই ৪ টি নির্দেশের ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধী জোট আরও শক্তিশালী হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি আগামী লোকসভা ভোটে মোদীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে উঠলেন বলেও মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।