স্থানীয় বাসিন্দারা আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ঠাকুরনগরের চিকনপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য নির্বিচারে কেটে ফেলা হয়েছে বড় বড় গাছ। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে গাছ কাটা বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে বনগাঁর মহকুমা শাসককে চিঠিও দিয়েছিলেন ঠাকুরনগরের বাসিন্দাদের একাংশ। আর এবার এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হল। রবিবার গাইঘাটা থানায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কোনও রকম সরকারি অনুমতি ছাড়াই বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং অন্যদের প্রত্যক্ষ মদতে প্রধানমন্ত্রীর হেলিপ্যাড নির্মাণের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে মূল্যবান বেশ কিছু গাছ।
শনিবার কলকাতা বিমান বন্দর থেকে হেলিকপ্টারে ঠাকুরনগরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর আসার জন্য একটি হেলিপ্যাড নির্মাণের প্রয়োজন হয়েছিল। আর সেই কারণে ঠাকুরবাড়ির কাছাকাছি একটি মাঠে সেই হেলিপ্যাড নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবিবার গাইঘাটার তৃণমূল নেতা ধ্যানেশনারায়ণ গুহ গাইঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘হেলিপ্যাড তৈরির জন্য প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। রাজ্য বিজেপি নেতারা এবং আরও কিছু জনের মদতেই এই গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার সময় তাঁরা সকলেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে গাছ কাটার জন্য বন দফতরের কাছ থেকে কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি।’ এই বেআইনি কাজের জন্য উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছেন ধ্যানেশনারায়ণ।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় সভার মঞ্চকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অভিযোগ তুলে শনিবার বিকেলে ঠাকুরনগরে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিল ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মমতাবালা ঠাকুর-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব। জ্যোতিপ্রিয়র অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর এই সভার আগের রাতে ঠাকুনগর এলাকা জুড়ে বিজেপি কর্মীরা মদ্যপান করে তাণ্ডব চালিয়েছে। মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়েছে। পাশাপাশি মোদীকে ভারতের মধ্যে সব থেকে বেশি দুর্নীতিপরায়ণ নেতা বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন মোদী। আর তাই তাঁর নামে উল্টোপাল্টা বলছেন। আগামী লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি আর কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকবে না। আর তখন নিজের কৃতকর্মের জন্য জেল খাটতে হবে তাঁকে।