এতদিন রাজ্যের স্কুলগুলিতে দেওয়া হত শারীরশিক্ষার পাঠ। এবার যোগ শিক্ষা দিতেও উদ্যোগী রাজ্য। জানা গেছে, যোগ শিক্ষার প্রসারে শীঘ্রই বাংলায় চালু হবে নতুন কলেজ। সেখানে যোগ ও নেচারোপ্যাথির ডিগ্রি কোর্স পড়ানো হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, হাওড়ার বেলুড়ে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এই কলেজ গড়ে উঠবে। তার নকশা তৈরির জন্য ক’দিন আগে টেন্ডার ডেকেছে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন।
দেশের অন্য অনেক রাজ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ ও নেচারোপ্যাথির ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট কোর্স অনেক বছর ধরে পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানায় এ রাজ্যে কোনও দিনই সেই সুযোগ ছিল না। কলেজ চালু হলে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা নিজের রাজ্যেই যোগ ও নেচারোপ্যাথির ডিগ্রি কোর্স করতে পারবেন। এমনকি সরকারি হাসপাতালেও তাঁরা চাকরির সুযোগ পাবেন। রাজ্যে যোগ ও নেচারোপ্যাথি চিকিৎসা জনপ্রিয় হলেও চিকিৎসকের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সে জন্য রোগীদের অনেক সময় ভিন রাজ্যে ছুটতে হয়। যোগ ও নেচারোপ্যাথির কলেজ চালু হলে সেই সমস্যা অনেকটা মিটবে।
সরকারি সূত্রের খবর, অ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির মতোই যোগ ও নেচারোপ্যাথির ডিগ্রি কোর্স করতে গড়ে সাড়ে চার বছর সময় লাগবে। যোগ ও নেচারোপ্যাথি কোর্সে এমবিবিএসের ধাঁচই মেনে চলা হবে। এমবিবিএস পড়ুয়াদের যে সব বিষয় পড়তে হয়, যোগ ও নেচারোপ্যাথি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের তার অনেকটাই পড়তে হবে। তার সঙ্গে যুক্ত হবে যোগ ও নেচারোপ্যাথি। ডিগ্রি দেবে রাজ্য স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। হোমিয়োপ্যাথি-আয়ুর্বেদ ইউনানির মতো এই কোর্সটিও পরিচালনা করবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে থাকা আয়ুষ দফতর।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, যোগ ও নেচারোপ্যাথি ডিগ্রি কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। খুব শীঘ্রই এই কলেজ চালু হবে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যোগ-নেচারোপ্যাথি শাখায় রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তারও আগে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয় যোগ ও নেচারোপ্যাথি কাউন্সিল। তা থেকে আরও একধাপ এগিয়ে এবার রাজ্যে যোগ ও নেচারোপ্যাথি কলেজ খুলতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অফ যোগ অ্যান্ড নেচারোপ্যাথির সভাপতি তুষার শীল বলেন, ‘যোগ ও নেচারোপ্যাথি চিকিৎসা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। যোগ ও নেচারোপ্যাথি কলেজ চালু করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এটা সরকারের একটা বড় পদক্ষেপ। শুধু এ রাজ্যেই নয়, সারা দেশে এই ধরনের ডিগ্রি কোর্স কোথাও নেই।’