কাথির জনসভা থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একের পর এক অভিযোগ তুলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা আক্রমণ শানালেন মমতা। উন্নয়নের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের বক্তব্যে বেশ কয়েকবার ‘চ্যালেঞ্জ’ শব্দটি উচ্চারণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন তিনি।
মমতা এদিন বিজেপিকে ‘টুকলিবাজ’, ‘চোরের দল’, ও বেহায়ার দল বলেও আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘টুকলি করেন আপনারা। আমি সরকারি সভায় দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে ওইসব অর্ধশিক্ষিত গর্ধশিক্ষিতদের চ্যালেঞ্জ করছি। আপনারা এটা প্রমান করুন। কন্যাশ্রী চালু হয়েছিল কবে? ২০১৩ সালে। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭০০০ কোটি টাকা। আর কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৫-তে। বছরে সারা দেশে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাথাপিছু মাত্র ৩ পয়সা। আমরা আপনাদের টুকলি করি না। আপনারাই আমাদের টুকলি করেন। কাজটাও করতে পারেন না। অর্ধশিক্ষিতদের জিজ্ঞেস করুন নির্মল বাংলা শুরু হয়েছিল কবে? আর ওরা নাচ-গান করে রাস্তায় নেমেছে কবে? এরা এভাবে মিথ্যা প্রচার করে যাচ্ছে’।
আক্রমণের সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, ‘দাঙ্গাবাজি আর গুণ্ডাবাজি করে ক্ষমতায় এসে কিছু হরিদাস, ক্রীতদাস নেতা এখানে এসে বলে বেড়াচ্ছে বাংলায় নাকি দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, হয় প্রমান করবেন না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। আর আমি প্রমান করতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।
কয়েকদিন আগে বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজোর কমিটিকে আয়কর দপ্তর নোটিস পাঠিয়েছিল।
সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজো যারা করে তাদের আয়করের নোটিস দেওয়া হচ্ছে। লজ্জা করে না? ক্লাবগুলোকে দুর্গাপুজোর সময় আমরা ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছি। এর বিরুদ্ধে তোমরা হাইকোর্টে মামলা করেছিলে। আর এখন কলকাতার চল্লিশটি দুর্গাপুজোর ক্লাবকে আয়করের নোটিস পাঠানো হয়েছে। ওরা মিথ্যা কথা বলছে। চরিত্রহনন করছে, বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছে। বাঙালির সঙ্গে বাঙালির যুদ্ধ লাগাচ্ছে। বলছে, বাঙলার লোকেদের তাড়িয়ে দেব। গায়ের জোর? একটা বাংলার লোকের ওপর হাত দিয়ে দেখুন, তারপর বুঝবেন’।
মমতা এদিন নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন কমিশন মনে হচ্ছে বিজেপি চালাচ্ছে। চুরি-ডাকাতি করা টাকা আর গুণ্ডাদের নিয়ে এসে সভায় ভাষণ দিয়ে বলে দিচ্ছেন নির্বাচন কবে হবে। কবে ফল প্রকাশ হবে, কটা আসন কে পাবে! তুমি কি করে এসব জানতে পারছ? আমি চ্যালেঞ্জ ক্রছি তুমি এটা বলতে পার না। তুমি এ রাজ্যে ৪২ এ শূন্য পাবে। একটা সিটও পাবে না। বাংলার মাটি অন্য মাটি’।