২২শে জানুয়ারি মালদায় সভা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই জেলায় পালটা সভা করল তৃণমূল। এই সভা থেকেই একদা কংগ্রেসের খাসতালুক মালদাকে তৃণমূলের জেলা বলে দাবি করলেন গনি খান পরিবারের সদস্যা মৌসম নূর৷
দু’দিন আগেই শুভেন্দুর হাত ধরে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বাংলার শাসক দলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নিজের প্রথম বক্তৃতায় বললেন, ‘দুদিন আগে আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে এসেছি। তারপর থেকে এত সম্মান– ভালবাসা পেয়েছি, যা আমাকে উজ্জীবিত করেছে। মনে হচ্ছে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একসঙ্গে লড়াই–আন্দোলন করলে আমরা অবশ্যই বিজেপিকে আটকাতে পারব’।
উত্তর মালদা থেকে মৌসমই যে আবার তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন, তা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এই সভা কার্যত হয়ে উঠেছিল লোকসভা নির্বাচনের প্রচারসভা। মৌসমকে বিরাট ব্যবধানে জেতানোর ডাক দিলেন বিভিন্ন নেতা–মন্ত্রীরা। নিত্যানন্দপুরের মাঠে সকাল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে। মাঠ ছাপিয়ে দু’ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে ছিল তৃণমূল কর্মী–সমর্থকদের জনস্রোত। উপচে পড়া ভিড় দেখে আপ্লুত উত্তর মালদার সাংসদ। তৃণমূলের কর্মীরা তো ছিলেনই, পাশাপাশি কয়েকদিন আগেও যাঁরা কংগ্রেসের ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করেছেন, এমন হাজার হাজার মানুষকে দেখা গেল তৃণমূলের পতাকা হাতে মিছিলে হাঁটতে। পথেই হয়ে গেল নিঃশব্দ দলবদল।
সভার প্রধান বক্তা ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গেছে, লড়াইটা হবে সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে তৃণমূলের। এখনও যাঁরা তৃণমূলের বাইরে আছেন, তাঁরা মৌসমের পথ অনুসরণ করুন। রাজ্যের উন্নয়নে শামিল হোন। কেন্দ্রে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেই সরকারের নিয়ন্ত্রক ভূমিকায় থাকবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ৪২টি আসনই আমরা দলনেত্রীর হাতে তুলে দিতে চাই। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি উন্নয়ন করেন। বিভাজন করেন না। আজকের সভায় যে এত লোক হয়েছে, সেটা বাইরের রাজ্য থেকে আনতে হয়নি। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মিথ্যাচার করে গিয়েছেন অমিত শাহ।’ বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘কেন্দ্রের মোদী সরকার মিথ্যাচারের ওপর চলছে। ক্ষমতায় আসার আগে যা প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল, তার একটিও পালন করেনি। শুধু মানুষকে ঠকিয়েছে। মেক ইন ইন্ডিয়া, জিএসটি, নোটবন্দি এমন একটাও কর্মসূচি সফল করতে পারেনি মোদী সরকার।’
পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুর গ্রামের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাসের ধারে হল এই জনসভা। ২২ জানুয়ারি এই মাঠেই জনসভা করে গিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এক সপ্তাহ পরই পাল্টা সভা করল তৃণমূল। মৌসম তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সভা অন্য এক মাত্রা পায়। তিনিই ছিলেন সভার মধ্যমণি। এছাড়াও ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, ওই দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা প্রমুখ।
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/685742771821358/?t=5