‘সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে প্রচুর মেধা রয়েছে। সেই মেধাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’ সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ আয়োজিত সপ্তম জঙ্গলমহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে এ কথাই বললেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের মেধাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, স্কুল-কলেজের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের পাশে রয়েছে সরকার।
সোমবারের অনুষ্ঠানটি ছিল জামবনির বাণীবিদ্যাপীঠ স্কুল মাঠে। সেখানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে প্রচুর মেধা রয়েছে। সেই মেধাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। জেলায় স্কুল-কলেজে কোনও ছাত্রছাত্রী যদি খেলাধুলোয় ভাল হন, তা হলে আলাদা করে তাঁদের নাম দফতরে পাঠান। সরকার তাঁদের পড়াশোনার দায়িত্বভার নেবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন। আমাদের দফতর থেকে অতিরিক্ত এটা করতে চাই।’
পার্থ ছাড়াও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা, ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সোরেন, জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা–সহ পুলিশের পদস্থ কর্তারা। খেলার বিভিন্ন বিভাগের কৃতী খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিশিষ্টরা। খেলাধুলো প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে হয়তো পড়াশোনায় ভাল নয়, কিন্তু খেলাধুলোয় খুব ভাল। কেউ পড়াশোনায় মাঝামাঝি কিন্তু তীরন্দাজিতে সাংঘাতিক। কেউ আবার ভাল ফুটবল খেলে। আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা ও ক্রীড়াতেও জোর দিচ্ছি। ঝাড়গ্রাম-সহ গোটা জঙ্গলমহলে খেলাধুলোর প্রতি নিজস্ব প্রাণশক্তি, স্বকীয়তা রয়েছে। অ্যাথলেটিকস, ফুটবল, তীরন্দাজি ছাড়াও শুনলাম এখানে ক্রিকেটের প্রতিও যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। ইতিমধ্যে এখানে তীরন্দাজি অ্যাকাডেমি হয়েছে। ফুটবল, ক্রিকেট অ্যাকাডেমি করার কথা ভাবা হচ্ছে।’
এর পাশাপাশি মন্ত্রী জানান, ‘এখানে স্কুল বাড়ছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চপ্রাথমিক হচ্ছে। উচ্চপ্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক হচ্ছে। মাধ্যমিক যেটা, সেটা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। আবার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে হিসেব করতে গিয়ে দেখলাম এমন কোনও জেলা নেই, যেখানে তিনটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল নেই! খেলতে গেলে স্বাস্থ্য ভাল করতে হবে। সুতরাং স্বাস্থ্যকে দেখার জন্য ভাল হাসপাতাল দরকার। সেটা এখন ঝাড়গ্রামে হয়েছে। ভাষাগত দিক দেখলে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার এগিয়ে এসে অলচিকি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পাঠ্যপুস্তক এখন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। আগামিদিনে হয়তো স্নাতকস্তর পর্যন্ত করার চেষ্টা করা হবে।’
জামবনিতে পুরস্কার বিতরণী সভা সেরে গতকাল পুরনো ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম সেন্টারে যান পার্থ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সেখানে তিনি বিজেপির পাল্টা সভার প্রস্তুতি বৈঠক করেন।