প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দলের নেতানেত্রীদেরই গুরুত্ব দেন না। আমল দেন না তাঁদের মতামতে— বিরোধীদের এই অভিযোগকে হাতিয়ার করে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই বিজেপির অন্দরের দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়েছিলেন তিনি। নীতিন গাডকরির এক মন্তব্যের সূত্র ধরে আবারও বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গাডকরি মুম্বইয়ের এক অনুষ্ঠানে নাম না করে মোদীর সমালোচনায় বলেন, ‘স্বপ্ন দেখাতে নেতারা ভালবাসেন। স্বপ্ন দেখানোর নেতাকে জনতারও ভাল লাগে। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ না হলে জনতা তাঁকে পিটুনিও দেয়। এ জন্য সেই স্বপ্নই দেখানো উচিত, যেটি পূরণ হতে পারে। আমি স্বপ্ন দেখানোর দলে নেই। আমি যা বলি, ডঙ্কা বাজিয়ে তা একশো শতাংশ পূর্ণ করি।’
গাডকরির ওই বক্তব্যকে এবার প্রকাশ্যে সমর্থন করলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, ‘উনি ঠিকই বলেছেন। এর আগেও একই কথা বলেছেন। স্বপ্ন দেখিয়ে তা পূরণ করতে না পারলে কী লাভ?’
পাঁচ রাজ্যে হারের পর থেকেই নাম না করে মোদী-শাহের সমালোচনা করে চলেছেন গাডকরি। একের পর এক মন্তব্য করে বিড়ম্বনাও বাড়াচ্ছেন দুজনের। গত কালের মন্তব্যে তিনি মোদীকেই বিঁধেছেন বলে ঘরোয়া ভাবে মেনে নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। তবে সরাসরি প্রশ্ন উঠলে এ নিয়ে অস্বস্তি এড়ানোরই চেষ্টা করছেন তাঁরা।
যেমন গাডকরির মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের মুখে মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘এতে আশ্চর্যের কী আছে? নীতিন গাডকরি তো এমন বক্তৃতা দিয়েই থাকেন।’ তবে সাংবাদিক বৈঠকের শেষে তাঁর কানে কানে আর এক নেতা দলের অবস্থান জানিয়ে দিতেই শেষ হয়ে যাওয়া সাংবাদিক বৈঠক ফের শুরু করে জাভড়েকর বলেন, ‘কংগ্রেস কী করে উন্নয়নকে শেষ করে দিয়েছে, গাডকরি সেটাই বলতে চেয়েছেন। আর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উন্নয়নের তারিফ করেছেন।’
যদিও এই গোঁজামিল দেওয়া জবাবে দলের অস্বস্তি বিন্দুমাত্রও আড়াল করা যাচ্ছে না। আর বিজেপির সেই অস্বস্তি আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েই গাডকরির মন্তব্যকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানালেন মমতা। যেমনটি করেছিলেন ব্রিগেডে। সেদিনও তাঁর প্রশ্ন ছিল, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গাডকরি, যশবন্ত সিনহাদের মতো নেতাদের বিজেপি কি সম্মান দেয়? এর জবাবে ব্রিগেডের পরও যেমন কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি গেরুয়া শিবির, তেমনই এবারও কুলুপ এঁটে পাঁকেই মুখ লুকোচ্ছে পদ্ম।