পুরনো মুখ দিয়ে আর ব্রিগেড ভরানো যাবে না। সফল হবে না সমাবেশও। তাই একসময় যাঁদের সঙ্গে সাপে-নেউলে সম্পর্ক ছিল, ব্রিগেড ভরাতে এবার তাদেরই ডেকে আনছে আলিমুদ্দিন। ডাক পড়েছে কানহাইয়া কুমারের মতো নেতাদেরও। বামেদের ব্রিগেডের এই বক্তা তালিকা দেখে দলের অন্দরেই উঠছে এমন কথা।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের কথায়, বামফ্রন্টের ব্রিগেডে বামেদের চেয়ারম্যান, সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক, পলিটব্যুরোর সদস্যরা বক্তব্য পেশ করবেন। সেখানে অমুক বক্তা, তমুক বক্তা আসছে বলে কৌশলী প্রচার চালানোর কিছু নেই। এতে বামেদেরই সম্মান নষ্ট হচ্ছে।
একদা সিপিএম ভেঙে অতি বাম নেতারা নকশাল সংগঠনের জন্ম দিয়েছিলেন। তখন থেকেই নকশালদের সঙ্গে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের অহি-নকুল সম্পর্ক। একে অপরের রাজনৈতিক বিরুদ্ধাচরণ করাই শুধু নয়, নানা সময়ে পারস্পরিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েছিল সিপিএম এবং নকশালপন্থী দল সিপিআই(এমএল)। স্বাভাবিকভাবেই একে অপরের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা স্বপ্নেও কখনও ভাবত না। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাই তাদের আবার কাছাকাছি নিয়ে এল। তাই এবার সিপিএমের ব্রিগেডে বক্তা হিসাবে ডাক পড়েছে সিপিআই (এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের। এই নাম দেখেই ভুরু কোঁচকাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। বামেদের মধ্যে নকশালপন্থী ফ্র্যাকসন হিসাবে পরিচিত লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদককে ব্রিগেডের মঞ্চে বলতে দেওয়াকে তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
বক্তা হিসাবে কানহাইয়া কুমারের নাম দেখে অনেকে হাসি চাপছেন। অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন, কিছুদিন আগেই যাকে মূলস্রোতের রাজনীতিতে আনতে চাইছিলেন না নেতারা তাকে হঠাৎ ব্রিগেডের মঞ্চে আহ্বান কেন? বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছেন, বুড়ো ঘোড়াদের দেখে দেখে বিরক্ত জনতার স্বাদ বদলাতেই কানহাইয়াকে আনা হচ্ছে। তাছাড়া কানহাইয়া, দীপঙ্করের মতো নেতাদের গরম বক্তৃতা শুনে যদি আবার জনতা সিপিএমের প্রতি আকৃষ্ট হয়, সেই আশাতেও তাদের আনা হচ্ছে কলকাতায়।
ব্রিগেড ভরাতে বাংলা এবং বাংলার বাইরে থেকে নেতা-নেত্রী এমনকি শাবানা আজমির মতো অভিনেতাদের আনা হলেও বক্তা তালিকায় নাম নেই বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। যেখানে পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে মহম্মদ সেলিম থাকছেন ঝালে-ঝোলে-অম্বলে সবেতেই যাকে দেখা যায়, পাওয়া যায় সেই সুজনের না থাকায় মুষড়ে পড়েছেন তাঁর অনুগামীরা।