সরকারি হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে আছেন একসময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বনকর্মী যোগেশ বর্মন। দক্ষিণ ভারতে লিভার প্রতিস্থাপন করাতে গিয়ে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এখন ঠাই হয়েছে এসএসকেএম-এ। নিজের দল ফিরেও তাকায়নি। এমন অবস্থার খবর পাওয়া মাত্র প্রাক্তন মন্ত্রীর খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোন করেন অসুস্থ যোগেশবাবুকে। চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ৩৭ লক্ষ টাকাও মঞ্জুর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজনীতির উর্ধে উঠে আরও একবার মানবিক সৌজন্য দেখালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মনের চিকিৎসার সব ভার নিল রাজ্য সরকার। মানবিক মমতার আপ্লুত ব্যবহারে যোগেশবাবু ফোনেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন। বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহারে আমি আপ্লুত। উনি আমার এই চরম বিপদের সময় যেভাবে পাশে দাঁড়ালেন, এই ঋণ কোনওদিন শোধ করতে পারব না’।
প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা অসুস্থ হয়ে সহায় সম্বলহীন অবস্থায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উত্তরবঙ্গ সফরকালীন এই খবর পাওয়া মাত্র উত্তরকন্যা থেকেই যোগেশবাবুকে ফোন করেন মমতা। ফোনে মুখ্যমন্ত্রী যোগেশকে বলেন, ‘আপনি কোনও চিন্তা করবেন না। আজ থেকে আপনার চিকিৎসার সমস্ত দায়ভার নিল রাজ্য সরকার। আপনি কেমন থাকেন না থাকেন, পরিবারের লোকজনদের বলবেন, আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। আপনি সুস্থ হয়ে উঠুন, ভালো হয়ে উঠুন এটাই কামনা করছি।’
ফোনে কথা বলা শেষ করেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘ওঁর লিভার প্রতিস্থাপন কি আমাদের রাজ্যে সম্ভব?’ চিকিৎসকেরা তাঁকে জানান, প্রাক্তন মন্ত্রীর লিভার প্রতিস্থাপন এ রাজ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এরপরেই যোগাযোগ করা হয় দক্ষিণ ভারতের একটি নামকরা হাসপাতালের সঙ্গে। সেখান থেকে জানানো হয়, পুরো চিকিৎসার জন্য ৩৭ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গেই তাতে সম্মতি দেন মমতা।
এর আগেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিরোধী নেতাদের চিকিৎসার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা। অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে তাঁর ব্রড স্ট্রিটের বাড়িতেও একাধিকবার গিয়েছেন মমতা। আরও একবার সেই মানবিক সৌজন্যের সাক্ষী থাকল রাজ্যবাসী। দল পাশে না থাকলেও অসুস্থ সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রীর পাশে দাঁড়ালেন মমতা।