উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রথম ১৬ মাসে তিন হাজারের বেশী এনকাউন্টারে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একথা উল্লেখ করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের তরফে পেশ করা একটি রিপোর্টে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবধিকার সংগঠনগুলি।
২০১৭ সালের ১৯ শে মার্চ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন যোগী আদিত্যনাথ। তিনি ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ১৬ মাসে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হয়েছে বলে দাবি সরকারের। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে নিজেদের সেই কৃতিত্বের নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছে যোগী প্রশাসন। সেই উদ্দেশ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিব অনুপ চন্দ্র রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসকের কাছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যের কৃতিত্ব ও পরিসংখ্যান উল্লেখ করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানেই উঠে এসে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাজনিত এই তথ্য।
চিঠিতে প্রকাশ, যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৮ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দুষ্কৃতী দমনে মোট ৩,০২৬ টি এনকাউন্টার করেছে রাজ্য পুলিশ। সেখানে গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জন দুষ্কৃতীর। গ্রেফতার করা হয়েছে ৭০৪৩ জন দুষ্কৃতীকে। এনকাউন্টারে আহত অপরাধীর সংখ্যা ৮৩৮। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ইউ পি পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ আলাদা অপারেশনে ৯ জন দুষ্কৃতীকে গুলি করে মেরেছে, গ্রেফতার করেছে ১৩৯ জনকে। সব মিলে এনকাউন্টারে মৃতের সংখ্যা ৭৮।
এই পরিসংখ্যানের হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়কালে যোগী রাজত্বে প্রতি দিন গড়ে ৬ টি এনকাউন্টার হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। গড়ে রোজ গ্রেফতার হয়েছে ১৪ জন। এনকাউন্টারে গড়ে প্রতি মাসে মৃতের সংখ্যা ৪ জন। যোগী আদিত্যনাথ উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম ৯ মাসে মারা গেছে ১৭ দুষ্কৃতী। পরবর্তী মাসগুলিতে যার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় বেশ কয়েক গুণ। গত বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেও এরকম একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল উত্তর প্রদেশ সরকার। সেখানে অবশ্য বলা হয়েছিল, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ১৭ জন দুষ্কৃতীকে গুলি করেছে।