অপসারিত অলোক বর্মার পরে নতুন সিবিআই অধিকর্তা কে হবেন, তা ঠিক করতে আজ, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের কমিটির বৈঠকে বসছে। একই দিনে ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হিসেবে এম নাগেশ্বর রাওয়ের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠছে।
একাধিক নাম নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, নতুন সিবিআই অধিকর্তা হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বাঙালি আইপিএস অফিসার রিনা মিত্র। কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ থেকে সাহিত্যে স্নাতক রিনা বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ সচিবের (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) পদে রয়েছেন। এর আগে সিবিআইয়ের সুপারিটেন্ড হিসেবে পাঁচ বছর কাজও করেছেন তিনি। তাঁর স্বামী, প্রয়াত দুর্গামাধব মিত্রও আইপিএস অফিসার ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে নিয়ে তৈরি উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে কর্মিবর্গ দফতর প্রাথমিক ভাবে যে ১২ জনের নাম পাঠিয়েছে, তাতে মধ্যপ্রদেশ ক্যাডারের রিনার নামও রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাছা হলে রীনাই হবেন প্রথম মহিলা সিবিআই প্রধান।
এত দিন সরকারের অন্দরে অনেকেই ভেবেছিলেন, গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ডে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া সিট-এর সদস্য তথা এনআইএ-র ডিজি ওয়াই সি মোদী অধিকর্তার পদে আসবেন। কিন্তু কংগ্রেসের দলনেতা খাড়গে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওয়াই সি মোদীকে নিয়ে তিনি আপত্তি তুলবেন।
পছন্দের লোক বসানো নিয়ে এমনিতেই তিরবিদ্ধ নরেন্দ্র মোদী আর এক মোদীকে নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে পড়বেন কি না, তা নিয়ে সংশয় যথেষ্ট। তার চেয়ে সিবিআই প্রধানের পদে কোনও মহিলাকে এনে তিনি বিতর্ক থামানোর চেষ্টা করতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট অনেকেরই ধারণা।
অন্যদিকে, বর্মাকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হিসেবে নাগেশ্বর রাওকে নিয়োগ করে মোদী সরকার। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাওয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৩ অক্টোবর নাগেশ্বর রাওকে অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ১০ জানুয়ারী দ্বিতীয় দফায় ফের তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই তিনি সিবিআইয়ের ২০ জন আধিকারিকের বদলির নির্দেশে সই করেছেন। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বক্তব্য, নাগেশ্বর রাও যে সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা বেআইনি। কারণ, সিবিআইয়ের অভিধানে ‘অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর’ বলে কোনও পদ নেই।
বর্মার অপসারণের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। আজ বিচারপতি এ কে সিক্রির বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি। উল্লেখ্য, ওই সিদ্ধান্তের সময় কমিটিতে হাজির বিচারপতি সিক্রির বিরুদ্ধে শর্মা স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ তুলেছেন।