২০৫০ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন মার্ক অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রা। কিন্তু এতকালেও পাওয়া যায়নি তাঁদের সমাধিস্থল। বহু বছর ধরেই প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে চলেছেন তা। অবশেষে নাকি খুঁজে পাওয়া গেল অ্যান্টনি-ক্লিওপেট্রার সমাধিস্থল। আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ১৮ মাইল দূরে প্রাচীন শহর তাপোসিরিস মাগনা, সেখানেই দুই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব শায়িত রয়েছেন, জানিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াস।
জীবদ্দশায় সেনানায়ক মার্ক অ্যান্টনি রোমের পূর্ব প্রান্তের রাজ্যগুলি দেখতেন, আর মিশরের রানি ক্লিওপেট্রার সঙ্গে থাকতেন। মৃত্যুর পরেও একই সমাধিতে সমাধিস্থ করা হয়েছিল দু’জনকে। জানিয়েছেন হাওয়াস। ওই সমাধিস্থলের কাছে প্রাচীন আমলের মুদ্রা ও স্বর্ণপেটিকাও মিলতে পারে বলে জানিয়েছেন ইতিহাসবিদরা।
ইতিহাস বলছে, ক্লিওপেট্রার স্বামী ছিলেন গ্রিক। ত্রয়োদশ টলেমি ওই বংশের শেষ সক্রিয় শাসক। মার্ক অ্যান্টনি ছিলেন ওই বংশের বিখ্যাত বীর। ইতিহাসে অ্যান্টনি-ক্লিওপেট্রার প্রেমের কথাই ফিরে এসেছে বারবার। বরং ক্লিওপেট্রার স্বামীর কথা খুব একটা জানা যায় না। আবার রোমান সম্রাট অক্টাভিয়াস অগাস্টাস সিজারের কাছে মার্ক অ্যান্টনির পরাজয় ও ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা রোমের ইতিহাসের অন্যতম ঘটনা।
ওই যুগলের জীবন ঘিরে রয়েছে প্রচুর রহস্য। পাশাপাশি মৃত্যু নিয়েও রয়েছে নানা রটনা। শোনা যায়, বুকে বিষাক্ত সাপের দংশন নিয়ে ক্লিওপেট্রার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার ঘটনাটিই মোটামুটি মিথ হয়ে গিয়েছে ইতিহাসে। অ্যান্টনির পরাজয়ের খবর পেয়েই নাকি ক্লিওপেট্রা এই সিদ্ধান্ত নেন। এই ঘটনা নিয়ে ইতিহাসবিদরাও দুই ভাগে বিভক্ত।
কারণ কেউ কেউ বলেন ক্লিওপেট্রার সঙ্গে সেনানায়কের প্রেমের কারণেই দু’জনকেই হত্যা করা হয়েছিল। আবার কেউ বলেন অক্টাভিয়ান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের পরই নাকি এই যুগল ধরা পড়ে যান। তাও ৩০ খ্রিস্টপূর্ব নাগাদ। বলা হয়, ১২ অগস্ট আত্মঘাতী হন অ্যান্টনি। এই সব মিলিয়েই প্রভাবশালী রানি ক্লিওপেট্রার কাহিনি ও তাঁর অকালমৃত্যুর ঘটনা জনপ্রিয় কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে।
এ নিয়ে হলিউডের রুপোলি পর্দা থেকে শুরু করে টিভি পর্দায়ও তৈরি হয়েছে বহু সিনেমা। যদিও কোনও গবেষক সাপের কামড়ে মৃত্যুর বিষয়টি উড়িয়ে দেন। তাই এই সমাধিস্থল খননের বিষয়টি প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য আরও বেশি জরুরি। একমাত্র মৃতদেহের অবশেষ মিললেই তাঁদের মৃত্যু সম্পর্কিত সমস্ত উত্তর পাওয়া যাবে। তাই সম্প্রতি তাঁদের সমাধিস্থল নিশ্চিত হওয়ার পর তা খনন করা নিয়ে উৎসাহ বেড়েছে ইতিহাসবিদদের।
ক্লিওপেট্রা সুশাসক ছিলেন, খাল কেটে মিশরে জলসেচের বন্দোবস্ত করেছিলেন, এ কথাও রয়েছে ইতিহাসে। কিন্তু তাঁর চেয়েও বেশি মানুষ জানে, পৃথিবীর অন্যতম সুন্দরী ছিলেন ক্লিওপেট্রা। গাধার দুধ দিয়ে তাঁর স্নানের কথাও লেখা রয়েছে কোনও কোনও জায়গায়।