বেশ কিছুদিন ধরেই পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছিল। এবার সরাসরি সেটাই স্পষ্ট করে দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব। পরপর দুবার দার্জিলিং থেকে বিজেপি প্রার্থীকে সাংসদ করে দিল্লীতে পাঠিয়েছিল মোর্চা। সেই বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাইল তারা।
জানা গেছে, আসন্ন লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীদেরই সমর্থন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সঙ্গে চলবে তাদের হয়ে প্রচার। পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়ে দিলেন বিনয় তামাং।
দার্জিলিং-এ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং৷ সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক অনিত থাপা৷ বৈঠক সেরে বেড়িয়ে বিনয় তামাং বলেন, ‘বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের সাহস থাকলে পাহাড়ে আসুক৷ তরাই-ডুয়ার্সে লোকসভা ভোটের প্রচার করে দেখাক। আমি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে মোর্চার হয়ে প্রচার করব। লোকসভা ভোটের আগে দেশে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার তোড়জোড় চলছে। সেখানে তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল থাকবে। মোর্চাও সেখানে থাকবে’।
বিজেপি বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে জোট ক্ষমতায় এলে মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা থাকছেই৷ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারাও দলনেত্রীকেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান৷ সম্প্রতি তাদের বাসনা উস্কে দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী৷ তাঁর দেশ চালানোর সব গুণ আছে বলে আগেই জানিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, রাজ্যের প্রাক্তন দুই রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী ও এমকে নারায়ণান৷ সেই সুরেই সুর মিলিয়ে মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আদর্শ ব্যক্তি। তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে ভালোই হয়৷’ একই মত পাহাড়ের আরেক দল জিএনএলএফের৷
এর আগে বিভিন্ন সময়ে জিটির-এর কাজকর্ম নিয়ে জিএনএলএফ সরব হলেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তাৎপর্যপূর্ণভাবে জিটিএ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন মন ঘিসিংরা। পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এদিনের বৈঠকের মাধ্যমে বিরোধী দুই রাজনৈতিক শক্তিকে কার্যত একই বিন্দুতে এনে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনের আগে যা মমতার বড়সড় রাজনৈতিক জয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।