এবার গড়িয়াহাটেই মাথা তুলবে এক টুকরো থাইল্যান্ড। সৌজন্যে কলকাতা পুরসভা। জানা গেছে, প্লাস্টিক নয়, রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে এবার থাইল্যান্ডের মতো ছাতা ব্যবহার করবেন সেখানের হকাররা। সারি সারি অস্থায়ী ছাতার তলাতেই চলবে বিকিকিনি। কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে থেকেই দেওয়া হবে ওই ছাতা। এবং প্লাস্টিকের পরিবর্তে হকারদের মধ্যে ওই ধরনের ছাতাকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করবে কলকাতা পুর প্রশাসন। মঙ্গলবার গড়িয়াহাটের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের নিয়ে বৈঠকের পর এ কথা জানান কলকাতার মহানাগরিক তথা রাজ্যের পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ওই বৈঠকে ফিরহাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার, হকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ, কলকাতা পুলিশ, দমকল, পুরসভার প্রতিনিধি এবং গড়িয়াহাটের ক্ষতিগ্রস্ত হকাররা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্লাস্টিকের পরিবর্তে ওই ধরনের ছাতা প্রাথমিক ভাবে গড়িয়াহাট এলাকার হকারদের দেওয়া হবে। তারপরে সারা শহরেই চালু করা হবে ওই ছাতা। বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে মহানাগরিক জানান, সমস্ত হকারকে আগেই প্লাস্টিক বন্ধের আবেদন জানানো হয়েছে। জতুগৃহ করে প্লাস্টিক লাগিয়ে রাখা চলবে না।
এরপরই তিনি বলেন, ‘বর্ষার সময় একটা অসুবিধা হয় ঠিকই। কিন্তু তাই বলে প্লাস্টিক কোনও মতেই ব্যবহার করা যাবে না। থাইল্যান্ড বা বিদেশের রাস্তার পাশে যে রকম চৌকো ছাতা দেখা যায়, তেমন ছাতা দেওয়া হবে এখানের হকারদের। প্রয়োজন হলে হকারেরা সেই ছাতা ব্যবহার করবেন। দোকানের সামনে ওই ছাতা লাগিয়ে নিলেই রক্ষা পাবে ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে শুরু করে দোকানের সামগ্রীও। ওই ছাতার নির্মাতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব।’ এছাড়া স্টলগুলির সামনে শেডও লাগানো থাকবে। কিন্তু কোনও মতেই কালো প্লাস্টিক দিয়ে ঘিরে জতুগৃহ করে রেখে বিপদ বাড়ানো যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মেয়র।
গতকাল গড়িয়াহাটের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মেয়র। পাশাপাশি তিনি জানান, গড়িয়াহাটে ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। গড়িয়াহাট থানার সহযোগিতায় হকার-তালিকা যাচাই করে খুব দ্রুত নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়ে আরটিজিএস-এর মাধ্যমে তাঁদের ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। চাকা লাগানো স্টলও তাঁদের হাতে দ্রুত তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। জানা গেছে, এ সপ্তাহের শেষেই গড়িয়াহাটে পৌঁছে যাবে চাকাওয়ালা স্টল।
অন্যদিকে, অগ্নিকান্ডের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্বিক হকার নীতি প্রণয়নের কথাও বলেছেন মেয়র। সে কারণে রাস্তা ভিত্তিক হকার-সমীক্ষা, হকারদের বৈধ লাইসেন্স দেওয়া থেকে শুরু করে ফুটপাতের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা পথচারীদের জন্য ছেড়ে রাখা, অফিসযাত্রীদের সুবিধার্থে রাত্রিকালীন হকারি চালু করা, গুরুত্বপূর্ণ ট্র্যাফিক মোড়গুলিতে ৫০ ফুট জায়গা ছেড়ে দেওয়া-সহ ধাপে-ধাপে এক গুচ্ছ নীতি প্রণয়ন করা হবে বলে জানা গেছে।