গত সপ্তাহেই নবান্ন থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে তাজপুর বন্দর নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ৩ বছর কেটে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাজপুরের গভীর সমুদ্র-বন্দর রাজ্য সরকার নিজেই তৈরি করবে। সেই লক্ষ্যেই তাজপুরে প্রিফিজিবিলি স্টাডি রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। তাতে বন্দরটি লাভজনক হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েই বন্দর তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। জানা গেছে, তাজপুরে তৈরি হবে মাইনর পোর্ট। এর জন্য নোটিফিকেশনও হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাইনর পোর্ট তৈরি করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি লাগে না। তাই রাজ্য সরকার তা নিজেরাই করতে পারবে। শুধু পরিবেশ মন্ত্রকের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট হলেই চলবে। তাজপুরে বন্দর করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বছর তিনেক আগে পরিকল্পনা করে। কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্য সরকারের চুক্তিও হয়। সেই চুক্তিতে ৭৪:২৬ শতাংশের শেয়ার ছিল কেন্দ্র ও রাজ্যের। কিন্তু সেই চুক্তির পর বন্দর তৈরির কাজ আর এগয়নি। বছর তিনেক ধরে দিল্লীতে তা পড়ে থাকায় চুক্তিভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, রাজ্য সরকার নিজেরাই মাইনর পোর্ট তৈরি করবে। গুজরাটে এ ধরনের অনেক পোর্ট আছে। সেখানে কান্দরা হল মেজর পোর্ট, বাকি সবই হল মাইনর পোর্ট। মাইনর পোর্ট তৈরি করতে খরচ হয় পাঁচ থেকে ছ’হাজার কোটি টাকা। মাইনর পোর্ট বেশ লাভজনকও হয়। বড় পণ্যবাহী জাহাজ আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয় না। এই মাইনর পোর্ট নির্মাণে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, কলকাতার বন্দরটি হল মেজর পোর্ট। তার অধীনে রয়েছে হলদিয়া বন্দর। তাজপুরে মাইনর পোর্ট হলে তা লাভজনকও হবে। আবার হলদিয়া বন্দরে তার কোনও প্রভাবও পড়বে না। জানা গেছে, তাজপুরে ১৬ মিটার গভীরতা রয়েছে। সেখানে জাহাজ আসার জন্য একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে। সেই চ্যানেলের বালি ও পলি দিয়ে জাহাজ ভেড়ার বার্থ তৈরি করা যাবে। এছাড়াও তাজপুর বন্দরের কাছেই রয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ। এইসব দিক খতিয়ে দেখেই মাইনর পোর্ট বা ছোট বন্দর তৈরির পক্ষেই মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।