মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে রাজ্যে। সেই পথ ধরেই চলতি বছরে উত্তরবঙ্গে আরও দু’টি এবং আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যে মোট ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ চালিত সব্জি সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করবে রাজ্য। সোমবার হুগলির সিঙ্গুরে দেশের মধ্যে প্রথম সৌরবিদ্যুৎ চালিত সবজি সংরক্ষণ কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
তিনি বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি বা জাইকার আর্থিক সহায়তায় প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে তাপসী মালিক কৃষকবাজারে এই সংরক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। এই সংরক্ষণ কেন্দ্রে ৩০ টন বিভিন্ন সবজি ও ফল সংরক্ষণ করা যাবে। ঘরটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সেলফ চার্জিং টেকনোলজির মাধ্যমে ২৮ কিলোওয়াটের সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে। কিন্তু, এই কেন্দ্রটি চালাতে ২৬ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ লাগবে। তাই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ জাইকার সহযোগী কাওয়াসাকি ট্রান্সপোর্টেশনের প্রধান কিউচি হিগুচির সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। পরের বছরেই উনি জানান, ওঁরা একটি ইউনিক প্রকল্প করতে চান, যেখানে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সব্জি সংরক্ষণ করা যাবে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা কখনও সম্ভব হবে কী! কিন্তু অবশেষে আমরা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে পেরেছি। এই সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালাতে প্রতিবছর গড়ে ৯০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এই কক্ষগুলির তাপমাত্রা সবসময় ১৬ থেকে ২৪ ডিগ্রির মধ্যে রাখা হবে।
গতকালের ওই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, মৎস্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অসীমা পাত্র, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জাপানের কনসাল জেনারেল মাসাউকি তাগা, জাইকার প্রধান কাজুয়া নাকাজো ও কায়াসাকি ট্রান্সপোর্টেশনের প্রধান কিউচি হিগুচি-সহ জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরা।
মন্ত্রীর কথায়, কৃষিকাজই বাংলার অর্থনীতির চালিকাশক্তি। তাই কৃষি ও কৃষিজ পণ্যের যথাযথ ব্যবহারের উপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। অমিতবাবু বলেন, এই ধরনের সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করলে সবজি নষ্ট হওয়া ও অভাবী বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সুফল বাংলার মাধ্যমে ফড়ে প্রথার বিলুপ্তি ঘটিয়ে চাষিদের আয় প্রায় দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা কিউচি হিগুচি বলেন, জাইকার আর্থিক সহায়তায় সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে পরিচালিত এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা সুফল বাংলা প্রকল্পকে আরও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ২৫ বছর সংরক্ষণ ব্যয় বাড়ার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। পাশাপাশি এই কেন্দ্রগুলিতে সংরক্ষণ করে রাখা সবজি বা ফলের গুণের কোনও পরিবর্তন হবে না।