গত ১৯ ডিসেম্বরই নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকদের চেক কেটে হাতে হাতে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার। সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় আরও স্বচ্ছতা আনতেই এমন ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর। সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার এই নতুন পদ্ধতির নামই ‘ধান দিন চেক নিন’।
শনিবার থেকেই জেলায় জেলায় শুরু হয়ে গেল এই পদ্ধতিতে ধান কেনা। যার ফলে জেলার কিসান মান্ডিগুলিতে উপচে পড়ল ভিড়। গতকাল হাওড়ার বাগনানে নতুন পদ্ধতিতে ধান কেনার সূচনা করলেন খোদ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। হুগলির সিঙ্গুরে আবার উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার।
গতকাল রাজ্যের ‘শস্যগোলা’ পূর্ব বর্ধমানে ৬৮টি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে ধান কেনা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় দেখা গেল, কৃষককেরা যে ধান বিক্রির জন্য কিসান মান্ডিতে নিয়ে এসেছেন, সেগুলির গুণমান দেখার পর ওজন করে তা কিনে নিচ্ছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। আবার মুর্শিদাবাদের ২৬টি ব্লকের ২৫টি কিসান মান্ডিতে উপচে পড়ে ভিড়।
অন্যদিকে, নদীয়াতেও ধান কেনায় ব্যাপক সাড়া মিলেছে। ধানের বস্তা গাড়িতে চাপিয়ে দলে দলে কৃষকরা এসেছিলেন ধান বেচতে। আবার দুই মেদিনীপুরেও ধান কেনা-বেচা হয়েছে উৎসবের মেজাজেই। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪২৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ৯০২৫ কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
‘ধান দিন চেক নিন’ পদ্ধতিতে ভাল রকম সাড়া পড়েছে জঙ্গলমহলেও। শনিবার সকালে জেলায় প্রথম এই প্রকল্পের সূচনা হয় গোপীবল্লভপুরের আদিবাসী গ্রাম কেঁন্দুগাড়িতে। বীরভূমের ১৯ টি ব্লকে এবার ২১টি কিসান মান্ডিতেও সরকারিভাবে ধান কেনা হয় গতকাল।
নতুন এই পদ্ধতিতে ধান বিক্রির টাকার চেক সঙ্গে সঙ্গেই কৃষকরা হাতে পেয়ে যাচ্ছেন। ধান কেনার এই নতুন ব্যবস্থার প্রথম দিনেই জেলার সর্বত্র রীতিমতো উচ্ছ্বাস দেখা গেছে চাষিদের মধ্যে। উল্লেখ্য হাওড়ার বাগনানের কিসান মান্ডিতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনে হাতেহাতে চেক তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে খাদ্য দফতর মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই তৈরি করেছে ৫০ হাজারেরও বেশি চেক। গতকাল থেকেই সেইসব চেক কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হল।